শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : অধ্যাত্মিক উন্নয়নের পাশাপাশি অবিভক্ত বাংলায় শিক্ষা সংস্কার ওসামজিক উন্নয়নে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা‘র অবদান আজও অবিস্মরনীয়। স্রষ্টার সৃষ্টির কল্যাণে আত্ম-নিবেদিত একজন আদর্শ মহান ব্যক্তি ছিলেন তিনি।
প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আজ ‘মানবতার সেবায় খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.)’ শীর্ষক মাসব্যাপী কার্যক্রমের উদ্বোধনী ও আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আহছানউল্লা’র ১৫০তম জন্মবর্ষ উদযাপনের জন্য ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁর মানবতার সেবার জীবনাদর্শন বর্তমান প্রজন্মসহ বিভিন্ন মহলের কাছে তুলে ধারার এবং যুব সমাজের মধ্যে তাঁর নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের বিস্তার ঘটানোর লক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের নির্বাহী কমিটি সদস্য এবং বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য, বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক ড. এম শমসের আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক এবং একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক ও কবি জাফর ওয়াজেদ। অনুষ্ঠানে মূলবক্তব্য পেশ করেন সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ। আলোচক হিসাবে ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়িার এ.এফ.এম গোলাম শরফুদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন মিশনের সহকারী পরিচালক ডা. নায়লা পারভিন।
ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) মানব জাতির কল্যাণে বিভিন্নমূখী কর্মসম্পাদন করেছেন সক্রিয়ভাবে, তেমনি তাঁর কৃত ও আরাধ্য কাজের কর্মী হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন, মানুষে মানুষে পার্থক্য নিশ্চিহ্ন করতে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাঁর লাখ লাখ ভক্ত অনুসারীসহ সকল মানব সমাজকে। তাঁর সে অনুপম আদর্শ ও শিক্ষায় উদ্ধুদ্ধ ও উজ্জীবিত হয়ে নিরলস আত্ম-নিবেদনে কাজ করে যাচ্ছে ‘ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন।’
জাফর ওয়াজেদ বলেন,‘ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) মিশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ ও মানুষের সেবায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেন এবং প্রত্যেককে ¯্রষ্টা ও সৃষ্টির সম্পর্ক স্বীকার ও উলব্ধি করার পরামর্শ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯৩৫ সালে নিজ গ্রাম নলতাতে আহ্ছানিয়া মিশন এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মূলত একটি বৈষম্যহীন সমাজেরই স্বপ্ন দেখতেন এবং সবর্দা দারিদ্র্য নিপীড়িত মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে স্রষ্টার নৈকট্য লাভের সাধনা করেছেন।’
মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ছিলেন নিপীড়িত মানব সমাজ-সংলগ্ন অধ্যাত্ম সাধক। একই সঙ্গে তার মধ্যে ছিল অপরিসীম সাংগঠনিক ক্ষমতা। তিনি সমাজ মনস্ক ছিলেন এবং নানামূখী সমাজ উন্নয়নের মধ্য দিয়ে মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মঙ্গলের পথ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। মিশনের মাধ্যমে তিনি সমাজ ও জীবনমূখী কর্মকা- পরিচালনা করেছেন এবং মিশন কর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
এম শমসের আলী তার বক্তব্যে বলেন, খানবাহাদুর ছিলেন একজন লেখক ও সাহিত্যিক। তিনি অনগ্রসর মুসলমানদের শিক্ষিত করতে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের হোস্টেল, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সবসময় উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শিক্ষা প্রসার করেছিলেন। তাঁর লেখার মধ্যেও সমাজ চিন্তা ও শিক্ষার উন্নয়নের কথা ফুটে উঠেছে।