শিরোনাম
ঢাকা, ১০ মার্চ, ২০২৪ (বাসস) : গুলশান থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক এমপি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে আর কোন মামলা না থাকায় কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
আজ রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে তার আইনজীবী আপিল শর্তে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আপিল গ্রহণ করে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে হুইল চেয়ারে করে উপস্থিত হন তিনি। এরপর আপিল শর্তে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর পুলিশের কাজে বাধা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং মেজর (অব.) মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ তিনজনকে ২১ মাসের কারাদন্ড দেন আদালত। কারাদন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন সাবেক বিএনপি নেতা ও বিএনএমের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মো. হানিফ। তবে এ মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী। মেজর হাফিজ শারীরিক অসুস্থতার জন্য দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন থাকায় এতদিন আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ মামলায় দন্ডবিধির পৃথক দুই ধারায় এ কারাদন্ড প্রদান করেন। তাদের দন্ডবিধির ১৪৩ ধারায় তিনমাস ও ৪৩৫ ধারায় দেড় বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাদন্ডের পাশাপাশি তাদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে। তাদের বয়স বিবেচনায় এ কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
অপরদিকে মামলার অন্য আসামি এমএ আউয়াল খান, মো. রাসেল, মঈনুল ইসলাম, মো. বাবুল হোসেন ওরফে বাবু ও মো. আলমগীর হোসেন ওরফে রাজুকে পৃথক দুই ধারায় সাড়ে তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
তাদের দন্ডবিধি ১৪৩ ধারায় ছয়মাস ও দন্ডবিধি ৪৩৫ ধারায় তিন বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় অনুযায়ী কারাদন্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাদের আরও এক মাস কারাভোগ করতে হবে।
এছাড়া মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিটভুক্ত অপর ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমএ কাউয়ুম, মো. দুলাল, তোফায়েল আহম্মেদ ওরফে লিটন, মো. জাহাঙ্গীর শিকদার ওরফে বাবু, আরিফুল ইসলাম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সামসুল হক মিয়াজী, মো. বিপ্লব, মো. খুরশিদ আলম মমতাজ, মো. মোশারফ হোসেন ও মো. মাহাবুব।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিরা ২০১১ সালের ৪ জুন গুলশান থানার মহাখালী ওয়ারলেস গেট পানির ট্যাংকির সামনে রাস্তার ওপর অবৈধ সমাবেশের অয়োজন করেন। এই সমাবেশ থেকে তারা পুলিশের উপর হামলা ও কাজে বাধা দেন। এ সময় তারা যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের পর গুলশান থানার এসআই কামরুল হাসান তালুকদার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চালাকালে আদালত ১২ জনের মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।