শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ মার্চ, ২০২৪ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের গৌরবের ইতিহাস। এখন আমাদের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর করা হয়েছে ইতিহাস বিকৃতি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলো মুছে ফেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে তৎকালীন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে ছাত্র জনতা ব্যারিকেড তৈরি করে একটি প্রশিক্ষিত সেনা বহরকে যেভাবে ২০ মিনিটের মত ফার্মগেটে আটকে রেখেছিলো তা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্যতম স্থান দখল করে রাখবে।’
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণ এবং জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত "গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রী" শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ২৫ মার্চ কালরাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড উদযাপন কমিটির সভাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান। এতে আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ এমপি, এ কে আজাদ এমপি, চিত্রনায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন আহমেদ আলমগীর, তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক জিলু, ইউনিসেফ সুপারস্টার ও টিভি রিপোর্টার সুবহা সাফায়েত সিজদা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ফার্মগেট প্রতিরোধের নেতা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমরা তাঁর আহ্বানেই প্রতিটা আন্দোলন-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। তিনিই ছিলেন আমাদের প্রেরণা। আমরা আজ স্বার্থক। নতুন প্রজন্মকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসটুকু জানাতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ইতিহাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এ ফার্মগেট এলাকা। ১৯৭১ সালের সেই রাতে আমরা ছাত্র জনতা বিশ্বের অন্যতম প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বহরকে প্রায় ২০ মিনিটের মত আটকে রেখেছিলাম। আমরা গাছ কেটে, লোহার চাই দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছিলাম, ঢিল, পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছিলাম। কিন্তু সেনা বহরটি ২০ মিনিটের বেশি আটকে রাখতে পারিনি। তারপরই এই বাহিনী ঢাকা শহরে নারকীয় হত্যাজজ্ঞ চালায়। কিন্তু সেদিন না পারলেও নয় মাস যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালি হত্যাযজ্ঞ চালানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়ে সর্বপ্রথম ফার্মগেট এলাকায় মুক্তিকামি ছাত্র জনতার ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়।
বক্তারা ২৫ মার্চ কালরাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড এর গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করেন এবং ফার্মগেট ব্যারিকেড’র ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
আলোচনা সভার শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধান আলোচক শাজাহান খান এমপি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়। এটি ছিলো বিশ্বের ইতিহাসে একটি গণহত্যা। বিশ্বের কাছ থেকে আমাদেরকে এ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনা বহরকে ব্যারিকেড দিয়ে ফার্মগেট তথা তেজগাঁওবাসী এক বীরত্বের ইতিহাস রচনা করে।’