বাসস
  ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:৩৬

মিয়ানমারে প্রচন্ড গরমে লোকরা ইয়াংগুনের পার্কগুলোতে ভিড় করছে

ইয়াংগুন, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): মিয়ানমারে উষ্ণতম দিনের সূর্যাস্তের সাথে সাথে বিদ্যূত বির্যয়ের সময় অসহনীয় গরম থেকে বাঁচতে লোকরা শীতলতার জন্য ইয়াংগুনের পার্কগুলোতে ভিড় করছে।
ব্যতিক্রমী গরম আবহাওয়ার একটি তাপ প্রবাহ এই সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে বিপর্যস্ত করছে। তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে এবং হাজার হাজার স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের ফলে বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষের আগে থেকেই মিয়ানমারের পুরানো বিদ্যুতের গ্রিড গ্রীস্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছেনা।
বর্তমানে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত এবং অফশোর গ্যাসের মজুদ হ্রাসের কারণে ব্যয়বহুল ডিজেল জেনারেটর বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান করা যাচ্ছে না। এই তীব্র গরমের মধ্যে প্রতিদিন লোকদের কমপক্ষে আট ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
প্রায় ৮ মিলিয়ন অধিবাসীর এই নগরীর লোকরা একটু স্বস্তির জন্য শুক্রবার রাতে শীতল আরামদায়ক হাওয়ার জন্য বাইরে নগরীর পার্কগুলোতে অবস্থান নিয়েছে।  
ইয়াংগুনের একজন বাসিন্দা এএফপি’কে বলেছেন, ‘আমার বাবা-মা বিকেলে তাদের বাড়িতে থাকতে পারেন না। তাদের বাইরে গিয়ে গাছের ছায়ায় বসতে হয়।’
শুক্রবার গভীর রাতে ইনিয়া হ্রদ পরিদর্শন করার সময় তিনি এএফপি’কে এ কথা বলেন।
এই নারী বলেন, তার বাবা-মা তাকে গরম আবহাওয়ায় বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তাকে মাথা ঢেকে রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এই বছরটি গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি গরম।’
মায়া আয় (৬২) বলেন, তিনি প্রতিদিন পার্কে আসেন যখন বিকাল ৫টায় বিদ্যুৎ চলে যায়।
তিনি বলেন, ‘বাড়িতে আবহাওয়া এত গরম যে শিশু বা বৃদ্ধ কেউই থাকতে পারছে না।’
দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানায়,বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের শুষ্ক অঞ্চলের দিনের তাপমাত্রা এপ্রিলের গড় থেকে ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
তারা জানায়, ম্যাগওয়ে অঞ্চলের চাউকে বুধবার তাপমাত্রা ৪৫.৯ সেলসিয়াসে  পৌঁছেছে।
মনোরম হ্রদের পাশে এক ব্যক্তি এএফপি’কে বলেছেন, তিনি এবং তার পরিবার শহরের উত্তরাঞ্চল থেকে এখানে এসছেন। কারণ, তারা গরমের কারণে বাড়িতে থাকতে পারেননি।
তিনি বলেন,  ‘আমরা বাইরে বসলেও সূর্যের রশ্মি খুব গরম এবং আমরা কোথাও বসতে পারি না।’
‘সকাল ১০টার পরে এটি আরও গরম হয়ে উঠে এবং আমরা এটি সহ্য করতে পারি না।’  তিনি বলেন, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
তিনি বলেন,‘প্রবীণরা গরমের কারণে বাইরে যাচ্ছেন না এবং তারা শুধু ভিতরেই থাকেন। সূর্যাস্তের পর তারা বাইরে আসেন।
ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে। তিনি বলেন, প্রতি সন্ধ্যায় বাড়িগুলো খালি হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় সবাই রাত ৯টা বা ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় বসে থাকেন।’
বৈশ্বিক তাপমাত্রা গত বছর রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, বিশেষ করে এশিয়া দ্রুত গতিতে উষ্ণ হচ্ছে। এই অঞ্চলে তাপপ্রবাহের প্রভাব আরও গুরুতর হয়ে উঠছে।