বাসস
  ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১০

দিনাজপুর হাকিমপুরে তাপদাহে পান বরজ রক্ষায় সেচ দিয়ে পানি দেয়া হচ্ছে

দিনাজপুর ২৯ এপ্রিল ২০২৪ (বাসস): জেলার হাকিমপুর উপজেলায় অনাবৃষ্টির কারণে তাপদাহে  পানপাতা মরে যেতে পারে- এমন আশঙ্কায় পানের বরজে সেচ এর মাধ্যমে পানি দিচ্ছেন পানচাষিরা।
হাকিমপুর উপজেলায় একাধিক পানের বরজ মালিকদের সাথে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই উপজেলার খোট্টামাধবপুর গ্রামের পানের বরজের মালিক মোখলেছুর রহমান ও মোজাম্মেল হক জানান, তারা দু’ভাইয়ের পারিবারিক সূত্র ধরে তাদের এক একর জমিতে ৪টি পানের বরজ রয়েছে। গত এক যুগে এ রকম দুর্যোগপূর্ণ অনাবৃষ্টি ও তাপদাহ দেখা যায়নি। এবার ব্যতিক্রমী তাপদাহে তাদের জীবিকার উৎস এ পানের বরজ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে কারণেই তারা পানের বরজের কাছে  মেশিন স্থাপন  করে রোববার বিকেল থেকে বরজে সেচের মাধ্যমে পানি দেয়া শুরু করেছে। তাদের সেচ দেয়ার কার্যক্রম দেখে ওই উপজেলার অন্যান্য পানের বরজের মালিকেরাও তাদের বরজে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে।   
হাকিমপুর উপজেলার একাধিক পানচাষিরা বলছেন, এখন পযন্ত তাপদাহের কারণে পানের বরজে কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি। তাদের আশঙ্কা  টানা তাপদাহের কারণে পানপাতা বড় হচ্ছে না। পানপাতার বরজ চারিদিক দিয়ে ঘেরা থাকে। বাতাস ঢুকতে পারে না। তাই গরমের কারণে পানপাতা মরে যেতে পারে। সে কারণে শ্যালো মেশিন দিয়ে পান বরজে পানি দিচ্ছেন পানচাষিরা।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের পানচাষ নিয়ে কাজ করেন মাঠ কর্মকর্তা ওবায়দুল হক  জানান, পানচাষিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তারা। গতকাল বিকেলে উপজেলার পানচাষিসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
হাকিমপুর উপজেলার ঘাসুরিয়া গ্রামের পানচাষি মো. নরু মিয়া বলেন, ‘আমি ২০ শতক জমি ১০ বছরের জন্য বর্গা নিয়ে পানপাতা চাষ করেছি। প্রতিবছর পানপাতা বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু এবার বৃষ্টির অভাবে পানপাতা বড় হচ্ছে না।  বাজারে তার বরজের পান তুলতে পারছে না। তাই শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে পানপাতার গাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।’
আরেক পানচাষি মো. বারেক আলী বলেন, ‘আমার নিজের দেড় বিঘা জমিতে পানের বরজ আছে। আমাদের এ এলাকা পানপাতা চাষের জন্য উপযোগী। এলাকার প্রায় সকলেরই অন্যান্য আবাদের পাশাপাশি পানপাতার চাষ রয়েছে, যা দিয়ে সবার সংসার চলে। কিন্তু এবার একটু ব্যতিক্রম ঘটেছে বৃষ্টির অভাবে।’ তিনি  বলেন, ‘এ সময়ে পানপাতা সাধারণত কম বাড়ে। তবে এবার একবারেই আকারে ছোট। বাজারে উঠলে ক্রেতারা কিনতেই চাইবে না। তার পরও আছে গরমের কারণে পানপাতার গাছ মরে যাবার ভয়। তাই আমরা শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে পানপাতার গাছকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করছি।’
জেলার হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. আরজেনা বেগম বলেন, ‘হাকিমপুর উপজেলার খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের ঘাসুরিয়া, খট্রা মাধবপাড়া মঙ্গলা ও ভাসুরিয়া গ্রামের মাটি পানপাতা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এই এলাকায় ৪০ হেক্টর জমিতে ৩৫৫টি পানবরজ রয়েছে।’ তিনি  বলেন, ‘এখনো পানপাতায় কোনো রোগ বালাই দেখা দেয়নি। তবে গরমের কারণে পানের গাছ মরে যেতে পারে- এমন আশঙ্কায় ভুগছেন তারা। সে কারণেই  পানচাষিরা আগে থেকেই শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিচ্ছেন।’