বাসস
  ০৪ মে ২০২৪, ১৩:৫১

গোপালগঞ্জ প্রিমিয়ার কোয়ালিটির বাসমতি ধান উৎপাদন

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া(গোপালগঞ্জ),৪ মে, ২০২৪ (বাসস): প্রিমিয়ার কোয়ালিটির বাসমতি চাল সাধারণত ভারত-পাকিস্তান থেকে আমদানী করতে হয়। সুপার সপে প্রতিকেজি চাল ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়। এ চালের বিরিয়ানী, পোলাও এবং সাদাভাত অভিজাত শ্রেণির মানুষের কাছে খুবই সমাদৃত। এমনই এ্যরোমেটিক ও প্রিমিয়ার কোয়ালিটির বাসমতি  উৎপাদিত হয়েছে গোপালগঞ্জে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)  বাসমতি জাতের ধান ব্রিধান-১০৪ উদ্ভাবন করেছে।  এ ধানের চাল ভারত-পাকিস্তান থেকে বাসমতির আমদানী নির্ভরতা কমাবে। এতে বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় হবে। বিশে^র বিভিন্ন দেশে এ চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেলে বিদেশে চাল রপ্তানী করে বৈদেশিক মূদ্রা আয় করা সম্ভব হবে। সম্ভাবনাময় ব্রিধান-১০৪ দেশের কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত করবে।  বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জে ৩ শ’ শতাংশের ৩টি প্লটে কৃষক ৩টি প্রদর্শনী প্লটে ব্রিধান-১০৪ জাতের আবাদ করে। ওইসব প্লটের ধান কৃষি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও কৃষককদের সামনে কেটে মাড়াই ও ওজন করে দেখো গেছে হেক্টর প্রতি এ ধান ৬.৮ মেট্রিক টন ফলন দিয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশে সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে এ জাতটি হেক্টরে ৮.৭১ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম । ব্রি ধান ১০৪ চাষাবাদে রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম হয়েছে।  
ব্রি গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের  সাইন্টিফিক অফিসার সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, ব্রি ধান ১০৪-এ আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। পরবর্তী বছর চাষাবাদের জন্য বীজ সংরক্ষণ করা যায়।  জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৭ দিন। ১ হাজার টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২১.৫ গ্রাম। এ জাতটি বাসমতি টাইপের ব্রি’র একমাত্র সুগন্ধি ধানের জাত। এ ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৯.২ ভাগ। এছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮.৯ ভাগ এবং ভাত ঝরঝরে। এ ধানের গুণগত মান ভালো অর্থাৎ চালের আকার আকৃতি অতিরিক্ত লম্বা চিকন  (৭.৫ মি.মি. লম্বা) এবং রং সাদা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন,ব্রি ধান ১০৪ এর বাসমতি চাল আমাদের কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর করবে। এ ধানের চাল বিদেশে রফতানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে। এ ধান  কৃষকের আয় কয়েকগুন বৃদ্ধি করে দেবে। তাই আমরা এ ধানের আবাদ সম্প্রসারণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করব।
 গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদাসপুর গ্রামের কৃষক মনির গাজী বলেন, ১শ’ শতাংশ জমিতে এ ধানের আবাদ করে হেক্টর প্রতি প্রায় ৭ টন ফলন পেয়েছি। এ ধান বেশি দামে বিক্রি করা যাবে। তাই এ ধান আবাদে আমার লাভ হবে। আমার ক্ষেতের ধানের ফলন দেখে আশপাশের কৃষক এ ধানের আবাদে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমি আগামী বছর ২শ’ শতাংশ জমিতে এ ধানের আবাদ করব।