শিরোনাম
ঢাকা, ৬ মে, ২০২৪ (বাসস) : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে আশ্রয় কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের অনেক ভয়াবহ-রোমহর্ষক ঘটনা আছে। তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষ না হলে এসব ঘটনা বলা ঠিক হবে না।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিবি প্রধান বলেন, মিল্টন কিছু অসহায়, বৃদ্ধ, অনাথ, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পুঁজি করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন। এই অর্থ তার ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি কোনো টাকা খরচ করেননি। আশ্রয় কেন্দ্রের কাউকে তিনি চিকিৎসাও দেননি।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে আশ্রিত শিশু, অসহায় বৃদ্ধ, ভারসাম্যহীন মানুষগুলোর দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পেয়েছি। তিনি গতকাল আমাদের এখানে এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি। প্রতিষ্ঠানের নাম আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামক আশ্রমের পুরো দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। সব খরচ তিনি বহন করবেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের আশ্রিত গরীব, অসহায় মানুষগুলোকে সেবা সেখানেই দেবে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন।
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে বর্তমানে ৪৫ জন শিশু আছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। শুনানির এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আশ্রমে বর্তমানে ৪৫টা বাচ্চা আছে।
মিল্টন সমাদ্দারকে মাদকসেবী বলছেন। মাদকসেবনের ব্যাপারে কী ধরনের তথ্য পেয়েছেন? জানতে চাইলে হারুন বলেন, তিনি যে মাদক সেবন করেন, ইয়াবা খান সেটি তো তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তার আশ্রমে যারা মারা গেছেন, তাদের ডেথ সার্টিফিকেট নিজেই দিতেন, ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করতেন। তাদের যে কোথায় কবর দেওয়া হলো! সে তথ্য কিন্তু তিনি আস্তে আস্তে স্বীকার করা শুরু করেছেন। তদন্ত শেষ হলে এ ব্যাপারে জানানো হবে।
রোববার (৫ মে) তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এরপর তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। মানবপাচার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন এবং তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত বুধবার মিল্টনকে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। মিল্টনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।