বাসস
  ১৫ জুলাই ২০২৪, ২২:৫৭

চলতি অর্থবছরে সারা দেশে প্রায় ২৬ হাজার সরকারি অফিস এপিএ স্বাক্ষর করেছে

ঢাকা, ১৫ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সারা দেশে প্রায় ২৬ হাজার সরকারি অফিস বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর করেছে। আজ এক সরকারি তথ্যবিবরণীতে এতথ্য জানিয়ে বলা হয়, বর্তমানে এপিএ প্রণয়ন, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের কাজটি এপিএএমএস নামক একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার ইউনিট এপিএ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ সকল পর্যায়ের সরকারি অফিসকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে। আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ২০২৪ আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান এবং মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
সরকারি কর্মকা-ে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি এবং গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কর্তৃক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ অর্থাৎ এপিএ প্রবর্তন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে সিনিয়র সচিব ও সচিবের মধ্যে প্রতিবছর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে থাকে। এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহ, গৃহীত কার্যক্রম ও লক্ষ্যমাত্রা এবং এ সকল কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক বিধৃত রয়েছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বার্ষিক ও মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এপিএ’র আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এপিএ স্বাক্ষর করছে।
পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে অধীনস্ত দপ্তর, সংস্থাসমূহের এপিএ স্বাক্ষর শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভাগীয়, আঞ্চলিক এবং জেলা পর্যায়ের অফিসসমূহকে এপিএ’র আওতায় আনা হয়। সব শেষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ের অফিসসমূহে এপিএ সম্প্রসারিত হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে এপিএ প্রণয়নে সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার-২০২৪, রূপকল্প-২০৪১, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২০৩০, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০, মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও নির্দেশনা, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীর সভাপতিত্বে বিদ্যমান কমিটির সভা আয়োজন ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এবং এডিপি বাস্তবায়নকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের নিজস্ব পরিকল্পনা এবং অ্যালোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম এপিএ-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও এ বছরের এপিএ-তে সকল সরকারি অফিসের শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এপিএ স্বাক্ষরের পাশাপাশি বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এপিএ বাস্তবায়নে মোট ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
সেরা ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যথাক্রমে- ১) বিদ্যুৎ বিভাগ, ২) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, ৩) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, ৪) পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ৫) কৃষি মন্ত্রণালয়, ৬) সেতু বিভাগ, ৭) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ৮) খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় (যৌথভাবে) ৯) পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং ১০) অর্থ বিভাগ।
প্রতিবছর মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এপিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শুদ্ধাচার পুরস্কারও প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সিনিয়র সচিব ও সচিবগণের মধ্য হতে ব্যক্তিপর্যায়ে শুদ্ধাচার চর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ মোঃ মাহবুব হোসেন, সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-কে ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার, ২০২৩-২৪’ দেয়া হয়।
এপিএ স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, উপদেষ্টাবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও সিনিয়র সচিব ও সচিববৃন্দ, এপিএ স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের এপিএ টিম লিডার ও ফোকাল পয়েন্টগণ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।