বাসস
  ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪২

কুমিল্লায় নৌযানের অপ্রতুলতায় বন্যার্তদের ত্রাণ পৌঁছাতে সমস্যা: শিশুখাদ্যের সংকট

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২৬ আগস্ট, ২০২৪ (বাসস): জেলায় নৌকা সংকটের কারণে ত্রাণ বিতরণে দেরি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা লোকজনকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেকে বন্যার্তদের জন্য রান্না করা খাবার আনছেন। নৌকার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকার জন্য সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বুড়িচং এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি ত্রাণবাহী পিকআপ, মিনি ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। সেখান থেকে মাত্র ছয়টি নৌকা ত্রাণ নিয়ে আসা-যাওয়া করছে।
জেলা রেড ক্রিসেন্টের শাহাজাহান মিয়া বাসসকে বলেন, আমরা ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার নিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। ছয়টি নৌকা চলাচল করছে।
পাবনা থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা স্বেচ্ছাসেবক আমির হোসেন বাসসকে বলেন, ৬০০ প্যাকেট ত্রাণ নিয়ে এসে দেড় ঘন্টা বসে আছি নৌকা পাচ্ছি না।
এদিকে বুড়িচংয়ের ফকির বাজার আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা শিশুখাদ্য না থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে কষ্টে আছে মা-বাবারা। চিড়া মুড়ি তো বাচ্চারা খেতে চায় না- এমন কথা জানালেন বলরামপুর গ্রামের দিনমুজুর নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বড়দের খাবারের সমস্যা নাই। বাড়িতে মেয়েটাকে বাজারের কেনা ডিব্বার দুধ ও সুজি দেওয়া হতো। টাকার অভাবে দুধ কেনা যাচ্ছে না।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শিশুখাদ্যের সংকট দেখা গেছে। বাড়িতে আটকেপড়া শিশুদের একই অবস্থা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের পাশের বাকশীমুল ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পানিতে প্লাবিত। সকালে পিতাম্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেললাইনের পাশে পলিথিনে ঘেরা একটি পরিবারের ৫ সদস্যকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। এ সময় কুমিল্লা নগরী থেকে যাওয়া বক্তিগত উদ্যোগে তাদের মধ্যে খিচুরি বিতরণ করতে দেখা গেছে। গৃহকর্তা আবদুল জলিল বলেন, বাকশীমুল গ্রাম থেকে সকালে চলে আসি। দেড় বছরের রিনাকে নিয়ে বিপদে আছি। বাড়িতে দুই দিন রান্না বন্ধ ছিল। আজ খিচুড়ি পেয়ে খেতে দিয়েছি। রাতে কি খাওয়াবো জানি।
ষোলনল ইউনিয়নের ভরাসার উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারি সংস্থার লোকজন শিশুদের প্যাকেট জুস কিনে দিয়েছেন। সেখানে আশ্রিত নারী তাছলিমা জানান, রাস্তার পাশে হওয়ায় প্রতিদিন শুকনো খাবার নিয়ে লোকজন আসছেন। কিন্তু শিশুখাদ্য কম আসছে।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, শুকনো খাবারের পাশাপাশি আমরা খিচুড়ি বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, নৌযান সংকটের কারণে রান্না করা খিচুড়ি কয়েক ঘণ্টা রাখা যাচ্ছে। বেশি সময় রাখলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবুও শিশুদের বিষয়ে মাথায় রেখে তাদের জুস, দুধসহ নরম খাবার বিতরণের জন্য নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে।