বাসস
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:০১

জরুরি ভিত্তিতে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, জরুরি ভিত্তিতে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। সবাই একযোগে কাজ করলে লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হওয়া যাবে।
আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইনে আয়োজিত ‘সাম্প্রতিক অকস্মাৎ বন্যায় প্রাথমিক শিক্ষা সেক্টরের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও করণীয়’-সংক্রান্ত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো,  আসবাবপত্রসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি ও বইপুস্তকের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা প্রকৌশলী, শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সঠিকভাবে নিরূপন করা হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত  জেলাগুলোর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পোশাক ও ব্যাগের তালিকা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। এছাড়া বিদ্যালয়গুলোর পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্লিচিং পাউডার সংগ্রহসহ অন্যান্য জরুরি কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব ফরিদ আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক নুরজাহান খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ ও এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী  মো. আব্দুর রশীদ মিয়া। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অন্যরা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
সভায় জানানো হয় যে, সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১১টি  জেলায় ২ হাজার ৭৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি ও বইপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিদ্যালয় স্ংস্কার কার্যক্রমের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন হবে ৩৩ কোটি টাকা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে  এ বাজেট সমন্বয় করা হবে। এগুলোর মধ্যে ২৮ হাজার ৭৩৬টি পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নোয়াখালীর ৭৬৩ টি, লক্ষ্মীপুরের ৫০১ টি, ফেনীর ৫৫০ টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২২টি, কুমিল্লার ৫২৩টি, চাঁদপুরের ১৬৯টি, চট্টগ্রামের ১৬৪টি, মৌলভিবাজারের ৭৭ টি, সিলেটের ৮ টি ও হবিগঞ্জের ২২টি। খাগড়াছড়িতে কোনো বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এছাড়াও জেলাভিত্তিক আউট অফ স্কুল চিলড্রেন শিক্ষা কার্যক্রমের শিখন কেন্দ্রসমূহের নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ১৮ টি উপজেলার ৯৪৬ টি শিখন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সভায় আরো জানানো হয়  যে, ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এবং মৌলভীবাজারের ১,৩২১টি বিদ্যালয়ের ১,১৫,৮২৩টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২৮,৭৩৬টি পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় করা হয়েছে। বাকিগুলোর সমন্বয়ের কাজ চলমান রয়েছে।  ফেনী সদর, দাগনভূঞা,  সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীর ৫৮২টি বিদ্যালয়ে ৯৭ হাজার ৫৫৩টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার উদ্বৃত্ত পাঠ্যপুস্তক হতে ২৪ হাজার ২৭৬ টি পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় করা হয়েছে। বাকি পাঠ্যপুস্তকের সমন্বয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২,৩০০ পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গুদামে থাকা পাঠ্যপুস্তক থেকে সেগুলো সমন্বয় করা হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে উপজেলার ৫৫৯টি বিদ্যালয়ে ১৩ হাজার ৮১০টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলো সমন্বয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ১০০টি বিদ্যালয়ে ২,১৬০টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলোর সমন্বয় করা হয়েছে। হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট জেলায় বন্যায় কোন পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে জানা গেছে।