বাসস
  ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৩৬
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৪০

চোখের জলে চট্টগ্রামে দুর্গা মাকে বিদায় জানান ভক্তরা

চট্টগ্রাম, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ (বাসস) : চট্টগ্রামের মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল বিদায়ের সুর। ট্রাকে ট্রাকে করে পতেঙ্গা সৈকত পাড়সহ চার স্থানে নেওয়া হয় প্রতিমা। আর সমুদ্রে দেবী দুর্গাকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো পূজার আনুষ্ঠানিকতা। চোখের জলে ঢাক, ঢোল বাজিয়ে দুর্গা মাকে বিদায় জানালেন ভক্তরা। সৈকত পাড়ে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষেরও ঢল নামে ।

আজ রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকেই চট্টগ্রাম নগরের চারটি পয়েন্টে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধানে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সকাল থেকে দেখা যায় তেল-সিঁদুর পড়িয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সাগরপাড়ে ছুটছেন ভক্ত-অনুরাগীরা। সকাল থেকেই ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে থাকে সমুদ্র সৈকতে।

এর আগে তিথির কারণে শনিবার একই দিনে মহানবমী ও বিজয়া দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে প্রথমে মহানবমীর কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা হয়। ওই পূজা শেষেই দশমীর লগ্ন হওয়ায় সকাল ৮টা ২৬ মিনিটের মধ্যে করা হয় বিজয়া দশমী বিহিত পূজা ও দেবীর দর্পণ বিসর্জন। তবে শনিবার নবমীর দিন হওয়ায় আজ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকায় ও কাট্টলী রাণী রাসমনি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকতসহ চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদী বা পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে  প্রতিমা।

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন পূজা ম-প ঘুরে ভক্তদের  দেবী দুর্গা মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিতে দেখা গেছে। পরে এক ম-প থেকে অন্য ম-পে ঘুরে দুর্গা দেবীর প্রতিমা দর্শন করে ভক্তরা মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করেন। তবে বিসর্জনের ক্ষণ এগিয়ে আসায় ভক্তদের মনে ছিল বিদায়ের সুর।

উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পূজার আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় আজ সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার অনুরোধ করেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।

এদিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে র্প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার ও চসিক প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই বিধায় সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা করতে পারছেন। বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিময় সম্প্রীতির জনপদ। এখানে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচরণ পালনের অধিকার আছে। এ দেশে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। ধর্ম নির্বিশেষে সবাই ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃত ধার্মিক ও মানবিক মানুষের সুদৃঢ় ঐক্যে শান্তির বাংলাদেশ গড়তে  হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জির সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল চন্দ্র নাথের সঞ্চালনায় এসময়  চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন ও নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।