শিরোনাম
ঢাকা, ৪ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আসন্ন জাতিসংঘ কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি লবির ক্রমবর্ধমান আধিপত্য প্রতিরোধ করে স্বার্থের দ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বে উঠে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের চাহিদার ভিত্তিতে একটি বাস্তবসম্মত জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে ।
আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতিসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট ৯ দফা সুপারিশ সম্বলিত পলিসি ব্রিফ হস্তান্তর করেছে সংস্থাটি। আজ টিআইবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি একথা জানায়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি লবির আধিপত্য ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে, ইউএনএফসিসিসি প্রতিবেদনে পছন্দসই পরিবর্তনে চাপ প্রয়োগসহ পরিবশেবান্ধব জ্বালানি প্রসারে অর্থ প্রদানের বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে। অন্যদিকে, প্যারিস চুক্তিতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিল প্রদান বাধ্যতামূলক না করে ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে এবং ‘নতুন’ এবং ’অতিরিক্ত’ সহায়তাকে উন্নত দেশগুলো শর্তযুক্ত ঋণ আকারে প্রদান করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়ন এবং সম্মেলনের এজেন্ডাভুক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সুশাসনের বেশ কিছু ঘাটতি লক্ষ্য করেছে টিআইবি। জলবায়ু অর্থায়নের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ-প্রক্রিয়ায় শুদ্ধাচার ও প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিল সরবরাহে ঘাটতি, জলবায়ু তহবিলের অপর্যাপ্ততা, ক্ষতিগ্রস্ত দেশে অভিযোজনে কম অগ্রাধিকারের পাশাপাশি প্রকল্প সময়াবদ্ধ বাস্তবায়ন ও ক্ষয়-ক্ষতি তহবিলে অনুদান-ভিত্তিক বরাদ্দ, এনডিসি বাস্তবায়ন জীববৈচিত্র ও প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষায় ঘাটতি দেখেছে টিআইবি।
একইসঙ্গে, জলবায়ু সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি লবির আধিপত্য এবং স্বার্থের দ্বন্দ্ব, নবায়নযোগ্য জ্বালানির নামে ‘গ্রীন ওয়াশ’র প্রচেষ্টা, উন্নত দেশে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার অব্যাহত থাকা ও বর্ধিত স্বচ্ছতা কাঠামোর বিবিধ শর্তে শিথিলতার উল্লেখ করে টিআইবির পক্ষ থেকে জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের বিবেচনার জন্য একটি পলিসি ব্রিফ প্রেরণ করা হয়েছে।
ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আয়োজক দেশ এবং সম্মেলন সংশ্লিষ্টদের সাথে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতের বিনিয়োগকারীদের সভা আয়োজন এবং সম্মেলনের সভাপতি এবং আয়োজক দেশ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকায় সম্মেলন আয়োজনে জড়িতদের আচরণবিধি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রদত্ত মোট অর্থ যা জলবায়ু অর্থায়ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার ৭০শতাংশই ঋণ। ফলে উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রয়োজনীয় জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি একদিকে যেমন ক্রমেই কঠিন ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের জনগণের ওপর নতুন ঋণের বোঝা তৈরি করছে।