শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ঢাকার আজিমপুরে বাসায় ডাকাতির সময় অপহরণ করা সেই শিশুকন্যা জাইফাকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব জানায়, অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে অপহরণকারীকে গ্রেফতার এবং শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে আজিমপুর মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার লালবাগ টাওয়ারের পাশের গলি থেকে ফারজানা নামে এক নারীর বাসায় ডাকাতির সময় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নেওয়ার পাশাপাশি তারা একটি বাচ্চাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীকে ওই শিশুর পরিবার শিশুকে উদ্ধারের জন্য র্যাব-১০ এর কাছে সহায়তা চায়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গতরাতে র্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানীর মোহাম্ম¥দপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই অপহরণের পরিকল্পনাকারী ফাতেমা আক্তার শাপলাকে (২৭) গ্রেফতার করে। অপহৃত ৮ মাস বয়সী শিশুকন্যা আরিসা জান্নাত জাইফাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ওই নারী ডাকাতি ও অপহরণের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে।
র্যাব জানায়, আরিসা জান্নাত জাইফার মায়ের নাম ফারজানা আক্তার। তিনি চাকরি করেন এবং বাবা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাজধানীর আজিমপুরের লালবাগ টাওয়ার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় ভুক্তভোগীর পরিবার বিগত তিন বছর বসবাস করে আসছেন।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানাগেছে, অপহরণের এক সপ্তাহ আগে ভিকটিমের মায়ের সঙ্গে অফিসে যাতায়াত করার সময় গ্রেফতারকৃত শাপলার পরিচয় হয়। এসময় শাপলা ভিকটিমের মায়ের কাছে তার নাম রাইসা এবং তার বাড়ি নওগাঁ জেলা বলে মিথ্যা পরিচয় দেয়। আসামি ফাতেমা আক্তার শাপলা জানায়, সে অবিবাহিত এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি সে সচিবালয়ের পরিবহন পুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকুরি করে। গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তার ভিকটিমের মা ফারজানা আক্তারকে আরো জানায়, তার ঢাকায় থাকার জন্য সাবলেট হিসেবে একটি ভাল রুম দরকার এবং তাকে সাবলেট হিসেবে ভিকটিমের বাসায় ভাড়া দিলে সারাদিন বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুকে (অপহৃত ভিকটিম) দেখভালও করতে পারবে। মা ভিকটিমের দেখাশুনার কথা চিন্তা করে গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তারকে সাবলেট হিসেবে বাসা ভাড়া দেয়ার জন্য রাজি হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তার গত ১৪ নভেম্বর বিকেলে বাসায় আসে এবং ২০০০ টাকা অগ্রিম ভাড়া হিসেবে প্রদান করে বাসায় রাত্রি যাপন করে। পরের দিন সকালে গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তার মা ফারজানা আক্তারকে জানায়, গ্রাম থেকে তার চাচাতো ভাই চাল নিয়ে তার বাসায় আসবে। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৮টায় গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তার তার চাচাতো ভাই পরিচয়ে তিন ব্যক্তিকে বাসায় নিয়ে আসে। বাসায় আসার পর আলাপচারিতার এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তার ও তার কথিত চাচাতো ভাইয়েরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের মাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আক্তার ও তার সহযোগীরা বাসার স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে ভিকটিম জাইফাকে নিয়ে গ্রেফতারকৃতের বাসায় চলে আসে এবং তার সহযোগীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।
পরবর্তীতে গোয়েন্দা নজরদারী ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকা থেকে ভিকটিম জাইফাকে উদ্ধার পূর্বক অপহরণের পরিকল্পনাকারী ফাতেমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।