শিরোনাম
চাঁদপুর, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলার ৮ উপজেলায় চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের রবি ও খরিপ মৌসুমে ৯৩ হাজার ৮শ কৃষক সরকারি প্রনোদনার সার-বীজ ও নগদ অর্থ পাচ্ছে ।
ইতোমধ্যে সরকারি প্রণোদনার বীজ, সার বিতরণ করা হচ্ছে। আর নগদ অর্থ কৃষকের নিজস্ব বিকাশ বা নগদের হিসাব নাম্বারে পৌঁছে দেয়া হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলার কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানাগেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বাসসকে জানান, চাঁদপুর জেলায় অতিবৃষ্টি ও বন্যাত্তোর পুর্নবাসন ও উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত জেলার সকল উপজেলায় কৃষকদের কয়েকটি বিন্যাসে ৯৩ হাজার ৮শ কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার ।
প্রথমত চলমান রোপা আমন চাষাবাদের জন্যে ১০ হাজার কৃষককে স্ব স্ব উপজেলার তালিকাভুক্ত অনুযায়ী প্রত্যাককে ৫ কেজি করে ধান বীজ , ১০ কেজি করে ডিএফপি সার, ১০ কেজি করে এমওপি সার ও নগদ ১ হাজার টাকা করে বিকাশ/ নগদে প্রদান করা হয়েছে।
বসত বাড়ির আঙ্গিনায় শাক সবজি চাষাবাদের জন্যে ৫ হাজার কৃষককে ৯ ধরনের সবজিবীজ সহ নগদ ১ হাজার টাকা বিকাশ/নগদে প্রদান করা হচ্ছে। এ সবজিবীজ গুলো হলো,, টমেটো, বেগুন, লালশাক, পালংশাক, সীম, লাউ, কলমী শাক, বাটা শাক, মিষ্টিকুমড়া।
জেলায় মাঠে চাষযোগ্য সবজি চাষে ১০ হাজার জন কৃষক পাবেন ৪০ গ্রাম করে সবজিবীজ ও ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সার এবং নগদ,বিকাশে ১ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে।
রবি প্রণোদনায় ৯ ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য ৬ হাজার ৫শ কৃষক পাবেন উন্নত জাতের বীজ ও সার। এ ফসল গুলো হলো ৩ মে. টন সরিষা বীজ , ৪ মে. টন গম বীজ, ২.৮ মে. টন ভুট্টা বীজ, ২ মে. টন মুশারী ডাল বীজ,২.৫ মে. টন মুগ ডাল বীজ,৩.২ মে. টন সয়াবিন বীজ , পেয়াজ বীজ ২শ কেজি , ২ মে. টন চিনাবাদাম, সূর্যমুখী বীজ ২শ কেজি। এ ৬৫০০ কৃষকরা এমওপি সার ৫৯ মে. টন এবং ডিএপি সার পাবে ৭৯ মে. টন। এই বীজ ও সার ইতিমধ্যে কৃষকের হাতে পৌঁছে দিতে কাজ করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস ।
জেলায় বোরো উফষী ধান আবাদের এর জন্য ৪২ হাজার কৃষক প্রত্যাককে ৫ কেজি করে উন্নত জাতের বীজ ও ১০ কেজি করে ডিএপি সার এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার পাবেন সরকারি প্রণোদনা সহায়তা হিসেবে। এ সুবিধা বিতরন শুরু হয়েছে।
বোরো হাইব্রিড ধান চাষের জন্য ২০ হাজার কৃষক প্রত্যকে পাবেন উন্নত জাতের হাইব্রিড ধান ও বীজ। এখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪০ মে. টন বীজ। যা সহসাই কৃষকগন পেয়ে যাবেন। এই সুবিধা বিতরন হচ্ছে উপজেলার মাধ্যমে।
জেলায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য প্রণোদনার আওতায় বিগত বছরের ন্যায় এবারও দুটি উপজেলায় ১৫০ জন করে মোট ৩০০ জন কৃষককে একক মাঠে ২ টি উপজেলায় কচুয়া উপজেলা ৫০ একর ও মতলব উত্তর উপজেলা ৫০ একর জায়গায় কৃষি যান্ত্রিকিকরন এর আওতায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মেশিন দ্বারা ধানের জমিতে চারা রোপণ ও কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তাবন্দি করা হবে। এই খাতে সরকারের খরচ হবে ২৭ লক্ষ ২৭ হাজার ৪শত টাকা। এর আগে বিগত বছরগুলোতে ৭ টি উপজেলায় ১ হাজার ৫০ জন কৃষক এই সুবিধা পেয়েছেন।
জেলার কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক সাইফুল হাসান আল আমিন জানান, বিগত অর্থ বছরের তুলনায় এই অর্থ বছরে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রায় ডাবল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এর ফলে কৃষকদের বীজ ও সার এর সমস্যা মিটে যাবে সেই সাথে বীজতলা তৈরির জন্য নগদ অর্থ দেয়া হয়েছে। এই বছর আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে ভালো ফলাফল আসবে বলে আমরা আশাবাদী। যার কারনে শাকসবজি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন নিরলসভাবে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কৃষকদের যে কোন সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা সবসময় তাদের পাশে আছি।