শিরোনাম
চাঁদপুর, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): চাঁদপুরে মেঘনায় জাহাজে সাত খুনের রহস্য উদ্ঘাটন, প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে নৌযান শ্রমিকেরা।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের হরিণা ফেরিঘাট, পুরান বাজার, বড় স্টেশন মোলহেড ও লঞ্চঘাট এলাকায় বহু পণ্যবাহী লাইটার জাহাজ নোঙ্গর অবস্থায় দেখা গেছে।
শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরান বাজারে গতকাল রাত পর্যন্ত পণ্য উঠানাম করলেও আজ সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকার রনাগোয়াল এলাকায় বেশ কয়েকটি পণ্যবাহী জাহাজ নোঙ্গর অবস্থায় আছে। ওইসব জাহাজের মাষ্টার, চালক ও বেশ কয়েকজন সুকানি এবং খালাসি পাড়ে এসে অবস্থান নিয়েছেন।
এ সময় তারা জাহাজে ৭ খুনের বিচার ও বিভিন্ন দাবীসহ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত নৌ পথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানান।
কর্মবিরতি থাকা এমভি এনডিই-১০ জাহাজের মাস্টার রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি প্রায় একযুগ জাহাজে চাকরি করছি। এই ধরনের ঘটনা কখনো দেখিনি। এই ঘটনায় সাতজন মায়ের বুক খালি হয়েছে। এটি নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও ঘটেছে। তবে তখন হয়ত দুই একজন খুন হয়েছে। এই রুটে চলাচল করে দেখেছি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ, চাঁদপুরের হাইমচর, মাঝের চর এলাকা ডাকাতের অভয়ারণ্য। এসব এলাকায় সব সময় ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর মালিকানাধীন এমভি এনডিই-৯ জাহাজের চালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ ভোর রাতে আমরা চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরে এসে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবানে আমরা কর্মবিরতিতে আছি। আমরা এই সাত খুনের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও নৌ পথের নিরাপত্তা দাবী করছি।
একই কোম্পানির এমভি এনডিই-১০ জাহাজের প্রধান চালক বাবুল মিয়া বলেন, আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলমান থাকবে। আমাদের সকল আন্দোলনের সাথে নিরাপত্তার বিষয়টি থাকে। কিন্তু বিগত কোনো সরকার আমাদের দাবীর প্রতি গুরুত্ব দেয়নি। নৌ পথের নিরাপত্তা জোরদার থাকলে এমন খুনের ঘটনা ঘটতো না। আমরা জেনেছি ৭ খুনের ঘটনার দিন নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে কয়েকবার ডাকা হয়েছে। তারা কোনো উত্তর দেয়নি। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন জেলা কমিটির সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ডাকা হয়নি।
কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট ফজলুল হক বলেন, চাঁদপুর নৌ সীমনায় আমাদের নিয়মিত টহল আছে। আগের চাইতে এখন টহল আরো জোরদার করা হয়েছে।
নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, নৌযান শ্রমিকরা তাদের দাবী নিয়ে কর্মবিরতি করছে। এটি তাদের বিষয়। আমরা চাঁদপুর নৌ অঞ্চলে সার্বিক নিরাপত্তা অব্যাহত রেখেছি।