ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা নেই, শীতে কাবু রংপুরের জনজীবন

বাসস
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৭ আপডেট: : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫

\ রেজাউল করিম মানিক \

রংপুর, ২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা রংপুরে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডায় জেঁকে বসেছে শীত। গত দু’দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে, খেটে-খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর ভিড়। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

দিনে রাতে ঘন কুয়াশা এবং হিমেল হাওয়ায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। কুয়াশা ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে কনকনে ঠাণ্ডার কারণে দরিদ্র শীতার্ত মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে ।

রংপুর আবাহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরে রংপুরে শীতের দাপট খুব একটা দেখা না গেলেও গত তিন দিনে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। রংপুরসহ আশে-পাশের এলাকায় তাপমাত্রা এখন ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। তিনদিন থেকে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কোথাও দেখা গেলে তাও ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য।

বৃহস্পতিবার সকালে রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কাউনিয়ার কৃষক আফজাল হোসেন জানান, কুয়াশায় আলুর কিছুটা উপকার হলেও পশ্চিমা বাতাসে আলুর ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চললে আলু লেট ব্লাইটসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, শীত ও কুয়াশার কারণে বোরোর বীজতলা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  

জানা গেছে, রংপুরে আড়াই থেকে ৩ লাখ হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে। এসব মানুষ প্রতিবছর শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্টে থাকেন।

সরকারি বরাদ্দ এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে এগিয়ে আসেনি। সচেতন মহলের দাবি শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এখনই এগিয়ে না এলে চরম দুর্ভোগে পড়বে শীতার্ত মানুষগুলো।  

এদিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, শীতজনিত কারণে আগের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বৃদ্ধ। বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে এবং শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।  

শীতের কারণে নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষগুলোর কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। খেটে-খাওয়া মানুষেরা ঠিকমত নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পেরে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম কমে গেছে। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো দিনের বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে দুর্ঘটনার আশংকা নিয়ে।

রংপুর আবহাওয়ার অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জানুয়ারি মাসে এই অঞ্চলে একাধিক শৈতপ্রবাহের শঙ্কা রয়েছে।  

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সাবেক এমপি সুবিদ আলীর স্ত্রীর জমি জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
ঝিনাইদহে চড়ক পূজায় পুণ্যার্থীদের ঢল
জুলাইয়ের মধ্যেই নির্বাচনের রোডম্যাপ বা অ্যাকশন প্ল্যান ঘোষণা করবে ইসি 
এফওসিতে যোগ দিতে ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব
তিন ঘণ্টা পর খুলনার সাথে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপন
তিস্তা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ পাঁচ বছর ধরে বন্ধ
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে দুইজনের জরিমানা
ইআরডি ও আইওএম-এর মধ্যে ৫ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি
দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ : সালমান এফ রহমানসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
উন্নতমানের গবেষণায় সবাইকে উৎসাহের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে: ভিসি বিএমইউ 
১০