চট্টগ্রাম, ১৫ মে ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম তথা দেশের রাজনৈতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রয়াত জননেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামের উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ছাত্ররাজনীতিতে যখন আমরা সংগঠন করতাম, তিনি পাশে থাকতেন, আমাদের হাতে কবিতার বই, কলম তুলে দিতেন, যাতে আমরা নবীনদের আকর্ষণ করতে পারি। তিনি ছিলেন উদার মনের, বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাজনীতিক।
আজ বৃহস্পতিবার বাকলিয়া শহীদ এনএমএমজে ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন, মোজাম্মেল, জিহাদদের স্মরণে এই শান্তিপূর্ণ বাকলিয়ায় যে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তৎকালীন মন্ত্রী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল নোমানের। তার সুযোগ্য সন্তান সাইয়েদ আল নোমান তূর্য আজ কলেজটির গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন। এটাই তার পিতার আদর্শ ও কর্মকাণ্ডের বাস্তব প্রমাণ। নোমান ভাই কলেজটির জন্য রাতদিন পরিশ্রম করেছেন। বাকলিয়াবাসীও তার সঙ্গে ছিল। এটা আমরা ভুলে যেতে পারি না।
ডা. শাহাদাত অভিযোগ করে বলেন, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নোমান সাহেবের নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে আওয়ামী লীগ। এটা খুবই দুঃখজনক। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন তাদের স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট মানসিকতা কাজ করে। তারা কলেজের গভর্নিং বডি নিজেদের মতো করে বদলে দেয়।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে থাকত না, যদি নোমান ভাই সময়মতো দৃঢ় অবস্থান না নিতেন। পাথরঘাটা মহিলা কলেজ, এনায়েতবাজার মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, জেনারেল হাসপাতাল, কর্ণফুলী ব্রিজ সবখানেই তার অসামান্য অবদান রয়েছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে শুরু করে আধুনিক চট্টগ্রাম গঠনে যার অবদান অনস্বীকার্য, সেই আব্দুল্লাহ আল নোমানের নাম ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে।
বাকলিয়া এলাকাবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, আজ যে-সব উন্নয়ন দেখছেন-বিস্তৃত রাস্তা, উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এর অনেক কিছুই শুরু হয়েছিল নোমান ভাইয়ের হাত ধরে। তার মতো নেতার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, মানবিকতা এবং উন্নয়ন চিন্তা আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি সাঈদ আল নোমানের সভাপতিত্বে ও উপাধ্যক্ষ নুরুল আলম রাজুর পরিচালনায় শোক সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ এরশাদ উল্লাহ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি প্রফেসারিয়াল ফেলো প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা এম এ সবুর, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন জামান, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, বিএনপি নেতা এস কে খোদা তোতন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এম আবুল ফয়েজ, মো. কামরুল ইসলাম, জাফর আহমেদ, গভর্নিং বডির সদস্য জাকির হোসেন, মোহাম্মদ সৈয়দ, কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মালেক, রবিউল হাসান চৌধুরী প্রমুখ।