চট্টগ্রাম, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): জেলার সীতাকুণ্ডে পরকীয়ার জেরে স্বামী জয়নাল আবেদীনকে হত্যার দায়ে স্ত্রী রিমা আক্তারসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন- শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম ও তার বন্ধু শাহাদাত হোসেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এইচ এম শফিকুল ইসলামের আদালত এ রায় দেন। আদালতের পেশকার নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন হেলাল জানান, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের তেলিপাড়া এলাকায় চার বছর আগে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী। আসামি শাহাদাত হোসেন কাইয়ুমের সঙ্গে রিমার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। খুনের ঘটনায় আরেক আসামি শাহাদাত হোসেন সহযোগিতা করেন। ঘটনাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রিমা আক্তারসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে বাড়বকুণ্ডের তেলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন ওরফে কালা মিয়াকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেন আসামিরা। জয়নাল চট্টগ্রাম মহানগরের হালিশহর এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন। ঘটনার পরদিন ১০ এপ্রিল সকালে পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় জয়নালের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন স্ত্রী রিমা দাবি করেন, প্রতিবেশী শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম তার স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর তার স্বামী আর ফেরেনি। কিন্তু এর পরপরই রিমা পালিয়ে যান। মরদেহ উদ্ধারের পরদিন নিহতের চাচাতো ভাই মহিউদ্দিন বাদি হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় হত্যা মামলা করেন।
এরপর ১২ এপ্রিল বাড়বকুণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০২১ সালে ২৬ অক্টোবর সীতাকুণ্ড থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজিব হোসেন তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২৩ সালের ১১ মে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রফিকুল ইসলামের আদালতে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বাদি ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন আদালত।
অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হেলাল বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আদালতে ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।