শেখ মুজিব ‘জাতির পিতা’ নন, মুজিববাদ ‘ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ’ : নাহিদ ইসলাম

বাসস
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ২১:৩৯ আপডেট: : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৩৬
ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম আজ বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নন।’ তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে মুজিবের ভূমিকা স্বীকার করলেও অভিযোগ করেন যে, তিনি ‘একদলীয় বাকশাল স্বৈরতন্ত্রের’ ভিত্তি স্থাপন করেন এবং বাংলাদেশকে ‘ভারতের করদ রাজ্যে’ পরিণত করেন।

আজ একটি ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেছেন। 

তিনি লিখেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নন। স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর ভূমিকা এবং ত্যাগ আমরা স্বীকার করি, তবে তাঁর শাসনামলে ঘটে যাওয়া জাতীয় ট্র্যাজেডির কথাও আমরা স্মরণ করি। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের একটি করদ রাজ্যে পরিণত হয়, ১৯৭২ সালের জনবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড এবং একদলীয় বাকশাল স্বৈরশাসনের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।’

আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূলে রয়েছে মুজিব পূজা এবং মুক্তিযুদ্ধ পূজা, যা জনগণের উপর অত্যাচার, জাতিকে লুণ্ঠন এবং নাগরিকদের প্রথম শ্রেণীর এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর মধ্যে বিভক্ত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে আধুনিক জমিদারিতন্ত্রের চেয়ে কম কিছু ছিল না। তবুও মুক্তিযুদ্ধ ছিল সকল মানুষের সংগ্রাম।

কয়েক দশক ধরে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে তার পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করে আসছে, জবাবদিহিতা ছাড়াই শাসন করছে এবং প্রতিটি দুর্নীতি ও দমন-পীড়নের ন্যায্যতা প্রমাণ করার জন্য মুজিবের নাম ব্যবহার করছে।

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান এই জমিদারিতন্ত্রকে ভেঙে দিয়েছে। কোনো ব্যক্তি, কোনো পরিবার, কোনো আদর্শকে আর কখনও নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে বা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে দেওয়া হবে না। ‘জাতির পিতা’ উপাধি কোন ঐতিহাসিক সত্য নয়। এটি ভিন্নমতকে দমন করতে এবং রাষ্ট্রকে কুক্ষিগত করার জন্য আওয়ামী লীগ কর্তৃক নির্মিত একটি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার। বাংলাদেশ সকল নাগরিকের এবং কোনো একক ব্যক্তি এর জন্ম বা ভবিষ্যতের মালিকানা দাবি করতে পারে না।

শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধের নামে মুজিববাদ একটি ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ। আমাদের সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং একটি ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে। মুজিববাদ হচ্ছে ফ্যাসিবাদ ও বিভেদের মতবাদ। 

এর অর্থ জোরপূর্বক গুম, হত্যা, ধর্ষণ এবং নিয়মতান্ত্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর অর্থ জাতির সম্পদ লুট করা এবং বিদেশে পাচার করা। এর অর্থ ইসলামোফোবিয়া, সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘুদের জমি দখল। এর অর্থ বিদেশী শক্তির কাছে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিক্রি করা। ষোল বছর ধরে, মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে একটি অস্ত্র হিসেবে জীবিত রাখা হয়েছিল, আর তার মূর্তির আড়ালে চলেছে অপহরণ, হত্যা, লুণ্ঠন এবং গণহত্যা ।’ 

‘মুজিববাদ একটি জীবন্ত বিপদ। এটি পরাজিত করতে হলে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সংগ্রাম একটি প্রজাতন্ত্র গড়ার জন্য- একটি স্বাধীন সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার, যেখানে সব নাগরিক সমান এবং কোনো দল, কোনো বংশ, কোনো নেতা জনগণের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের প্রজাতন্ত্র।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের আরও ঘন ঘন বাংলাদেশে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
উত্তরায় আনসার-ভিডিপি মহাপরিচালকের মন্দির পরিদর্শন
জামায়াতের আমীরের সঙ্গে ভুটানের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিভাগ ও জেলায় বিকেএসপি’র মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে : ভোলায় বিএনপি নেতা আমিনুল হক
মা ইলিশ রক্ষায় দেশব্যাপী অভিযান শুরু করবে নৌপুলিশ
ব্যাংকগুলোকে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের তথ্য সিআইবি ডাটাবেজে জমা দিতে হবে
আনিসুল হকের বান্ধবীর প্রায় ৮৭ কোটি টাকার ব্যাংক একাউন্ট অবরুদ্ধ করেছে সিআইডি
রাজধানীতে বিশেষ অভিযানে ২৯ জনকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ
আফগানিস্তানে দেশজুড়ে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট
ইসরাইলের গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান
১০