নওগাঁ, ১৭ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : জেলার আত্রাই নদীর পানি জোতবাজার পয়েন্টে ৩০ ও রেলওয়ে ব্রীজ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের আত্রাই ও মান্দা পয়েন্টের ২১টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছে প্রশাসন। তারা বলছেন, আর বৃষ্টিপাত না হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পানি আরো কমে যাবে।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন জানান, তার রোপনকৃত ১৬ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। উপজেলার পালশা গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম জানান, তিনি ৯৫ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছেন। গত কয়েক দিনে কিছু ধান পানিতে ডুবে গেছে। তবে আজ থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এতে সামান্য ক্ষতি হবে ফসলের।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ কুমার জানান, গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জমির আমন ধান ও অন্যান্য ফসল পানিতে নিমজ্জিত হলেও কোনো বাড়ি ঘর ভেঙে যায়নি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আত্রাই উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ রসুলপুর, সদুপুর, লালুয়া, বেওলা, নন্দনালী, জগদাস, শিকারপুর, দুবাই, গুরনৈ ভাঙ্গাজাঙ্গাল, বৈঠাখালি ও নন্দনালী স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত স্থানগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কম এবং নদীতে উজানের পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে ২/১দিনের মধ্যে আরো পানি কমে যাবে।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান, আজ রোববার দুপুরে আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং আত্রাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি সমতল বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুটি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত জেলার কোথাও বাঁধ ভেঙ্গে যায়নি।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, সব সময় আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন অব্যাহত রাখা হয়েছে। ইতিপূর্বে রাণীনগর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া আত্রাই ও মান্দা উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সব সময় পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। প্রশাসন যে কোন সমস্যায় মানুষের পাশে রয়েছে এবং থাকবে। এছাড়া প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে একটি করে দল গঠন করে দেয়া হয়েছে।