।।রেজাউল করিম মানিক।।
রংপুর, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): জেলার গঙ্গাচড়ায় দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ১৩০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু ও রংপুর লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ধসে যেতে পারে বৃহৎ এই সেতুটি।
এই সেতু ও এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার বাসিন্দারা।
গত ১১ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার অংশ ধসে ৭০ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়। ১৭ আগস্ট ধস থেকে ভাঙন শুরু হয়। আজ ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে রংপুর - লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়কসহ লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের প্রায় ১৭০০ পরিবার সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙন তীব্রতর হলে এসব পরিবারের ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়দের দাবি, এখনই জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। সেতু, সড়কের পাশাপাশি গৃহহারা হবে ১৭০০ পরিবার। জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রিপন ও কাইয়ুম বলেন, প্রতিদিন ভাঙন বাড়ছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
ব্যবসায়ী শাহনাজ বেগম বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শহরে যাই। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে যোগাযোগ পুরোপুরি
বন্ধ হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থী বাদশা মিয়া জানান, প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দেখি বাঁধ ভেঙে নদীতে চলে গেছে। কাল হয়ত রাস্তা থাকবে না। তারপর হয়ত আমার স্কুলটাই থাকবে না।
স্থানীয় কৃষক খোরশেদ আলী বলেন, আমাদের আবাদি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। তার কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখবে বলেছে। এখন পুরো সেতু হুমকিতে আছে। আশা করি তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা বলেন, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।