ঢাকা, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সংগঠনটি মনে করে, এ ঘটনা জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে ইউট্যাব নেতৃবৃন্দ।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এ তথ্য জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের প্রধান প্রবেশদ্বার এবং অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর স্থানে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুধু দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। এটি দেশের ভাবমূর্তি, নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিপুল পরিমাণ আমদানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি এবং বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা জাতীয় অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা।
নেতৃদ্বয় বলেন, “বারবার এমন অগ্নিকাণ্ড সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা, অব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা দুর্বলতার প্রতিফলন। এটি দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাও প্রকাশ করে। গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের মনোযোগের অভাব রয়েছে।”
তারা আরও বলেন, “জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে, ঠিক তখনই এমন বিপর্যয়মূলক ঘটনা ঘটেছে। ইউট্যাব মনে করে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার হীন উদ্দেশ্যে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হতে পারে। কোনো রাজনৈতিক শক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা, তা নিরপেক্ষ ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে হবে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “কেবল অগ্নিকাণ্ডের কারণ নির্ণয় করাই যথেষ্ট নয়। এর পেছনে যদি কোনো অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা বা দেশবিরোধী শক্তির মদদ থাকে, তবে তা খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
ইউট্যাব নেতারা জানান, সরকার ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান ত্রুটি চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা বলেন, “কার্গো ভিলেজসহ বিমানবন্দরের সকল স্থানে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং তা নিয়মিত তদারকির আওতায় আনতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত আমদানি-রপ্তানিকারকদের তালিকা তৈরি করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।”
ইউট্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির স্বার্থে সরকার যেন বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে কোনো বিলম্ব না করে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি জানাই এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানাই।”