
ঢাকা, ১ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো আজ দেশব্যাপী সমাবেশ করেছে।
আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’- নীতির বাস্তবায়ন, স্বাধীন ও কার্যকর তথ্য কমিশন গঠন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, রেডিও, সংবাদ সংস্থা, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও মাল্টিমিডিয়ার জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনসহ সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও অধিকার সংরক্ষণের ৩৯ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও অধিকাংশ গণমাধ্যমে তা কার্যকর হয়নি।
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা বলেন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে এবং যেকোনো মূল্যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও আছে- সাংবাদিকদের জন্য সপ্তাহে দুইদিন ছুটি, সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড, হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা, সাগর-রুনি হত্যাসহ সব সাংবাদিক হত্যা মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করে এমন সব আইন বাতিল করা, সাংবাদিকদের পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত গঠন এবং পেশাগত কাজে আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো দাবি জানায়, পত্রিকা, সংবাদ সংস্থা, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও মাল্টিমিডিয়ার জন্য একটি ‘একীভূত জাতীয় গণমাধ্যম নীতি’ প্রণয়ন করতে হবে।
এই নীতির অধীনে প্রতিটি মাধ্যমের জন্য পৃথক উপ-নিয়ম থাকলেও একটি সমন্বিত কাঠামো থাকলে বাস্তবায়ন সহজ হবে।
একইভাবে পত্রিকা, অনলাইন মিডিয়া, টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদ সংস্থা ও মাল্টিমিডিয়ার জন্য একটি অভিন্ন ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি জানানো হয়। বর্তমানে শুধুমাত্র প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য ওয়েজ বোর্ড রয়েছে, কিন্তু টেলিভিশন বা অনলাইন মিডিয়ার জন্য নেই।
ফলে টেলিভিশন সাংবাদিকরা প্রায় ক্ষেত্রেই কাজ করেও ন্যায্য পারিশ্রমিক পান না, যা অমানবিক বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।
তারা আরও বলেন, সাংবাদিকদের গণছাঁটাই বন্ধ করতে হবে এবং যারা ইতোমধ্যে ছাঁটাই হয়েছেন তাদের পুনর্বহাল করতে হবে।
এ ছাড়া পদত্যাগী বা বরখাস্ত সাংবাদিকদের পাওনা ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। কোনো সাংবাদিককে নিয়োগপত্র, ছবি-সংবলিত পরিচয়পত্র ও সঠিক বেতন ছাড়া অস্থায়ী, স্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিকভাবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। সরকার ও গণমাধ্যমকে দ্রুত সাংবাদিক নিয়োগনীতি প্রণয়ন করতে হবে।
রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর উদ্যোগে মূল সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী ৩৯ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোও সমাবেশ আয়োজন করে।