নওগাঁয় টোলমুক্ত ফুলকপির হাট

বাসস
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:০৩
ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। ছবি : বাসস

।। বাবুল আখতার রানা।।

নওগাঁ, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশের জেলাগুলো শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। বাদ পড়েনি নওগাঁ জেলাও। ইতোমধ্যে শীতকালিন বিভিন্ন শাকসবজি হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। শীতের সবজির মধ্যে অন্যতম ফুলকপি। আর ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এতে দামও কিছুটা কমেছে। তবে কৃষকরা ফুলকপি এখন আর হাট-বাজারে না নিয়ে অস্থায়ী বাজারে বিক্রি করছেন। এতে টোল দিতে হয় না।

নওগাঁ সদর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ডাক্তার মোড় এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসেছে ফুলকপির হাট। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায়। দেড় ঘণ্টার টোলমুক্ত এ হাটে বেচাকেনা চলে লক্ষাধিক টাকার। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ফুলকপি চলে যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় বরি মৌসুমে প্রায় ৯ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজির চাষাবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ফুলকপি ১২০ হেক্টরে করা হয়েছে যা থেকে উৎপাদন হবে প্রায় ২ হাজার ১০০ টন।

জেলার মাঠে মাঠে রবি মৌসুমে শীতকালিন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, শিম, পটল, বেগুন, মুলা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। ভালো ফলনের আশায় ক্ষেতে নানা পরিচর্চায় ব্যস্ত চাষিরা। প্রায় ১ মাস থেকে শীতকালীন সবজি হাট-বাজারে উঠেছে। তবে ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় সরবরাহ বেড়েছে।

জানা গেছে, ডাক্তার মোড়ের অস্থায়ী পাইকারি ফুলকপির হাট ১০ দিন ধরে ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে বেচাকেনা শুরু হয়ে চলে ৭টা পর্যন্ত। কেউ ভ্যান, কেউ সাইকেল, কেউ বা কাঁধে করে ফুলকপি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। তবে আগের দিন বিকেলে কৃষকরা ক্ষেত থেকে ফুলকপি সংগ্রহ করেন। এ হাট থেকে শহরের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার।

হাঁপানিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছি। ৫০ কেজি ফুলকপি এ হাটে নিয়ে এসে ১ হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছি। ১৫ দিন আগে ১৮শ টাকা মণ বিক্রি হয়েছিল। হাটে বিক্রি করতে গেলে প্রতি পিসে ২ টাকা খাজনা (টোল) ও ১ টাকা ভাড়া গুণতে হয়। সে হিসেবে এ হাটে খাজনা ও ভাড়া ছাড়াই বিক্রি করা কৃষকদের জন্য সুবিধা হয়েছে।

বর্ষাইল গ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, ডাক্তার মোড়ের হাট থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার ফুলকপি কিনে ট্রাকে করে ঢাকায় পাঠাই। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই ঘণ্টার এ হাটে লক্ষাধিক টাকার ফুলকপি বেচাকেনা হয়। তবে দিন যত যাবে ফুলকপির উৎপাদন ও সরবরাহ তত বাড়বে। এতে দাম কিছুটা কমে আসবে। আগামী আরও ১ মাস এ হাটে বেচাকেনা চলবে।
সদর উপজেলার চক-বালুভরা গ্রামের কৃষক মোতালেব হোসেন বলেন, ১৫ কাঠা জমিতে প্রায় ২২শ ফুলকপি চারা রোপণ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। প্রতি পিস ফুলকপি ২৫ টাকা হিসেবে ৫৫ হাজার টাকা বিক্রির আশা। খরচ বাদে লাভ থাকবে অন্তত ৪০ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোমায়রা মণ্ডল বলেন, ভালো দাম পাওয়ায় অনেক কৃষক আগাম ফুলকপির আবাদ করেন। শুরুতে উৎপাদন কম থাকায় দাম ভালো পাওয়া যায়। এতে লাভ বেশি হয়। তবে উৎপাদন বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসে। এরপরও বাজারে দাম ভালো আছে ফুলকপির। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ওয়েটিং টাইম শূন্যে, অপারেশনাল দক্ষতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর
রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী গ্রামে বিজিবির চিকিৎসা ক্যাম্প
বাংলাদেশি পণ্যের বিনিময়ে মাদক পাচারকালে ৯ চোরাকারবারি আটক
বিনয়ের মাধ্যমে বিএনপির কল্যাণমুখী রাজনীতির বার্তা পৌঁছে দিতে হবে : আমীর খসরু
কাপ্তাইয়ে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে শরীয়তপুরে আলোচনা সভা
অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে দেশের কৃষিজমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে : মৎস্য উপদেষ্টা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০ মাসে তিন হাজার মামলা, নিষ্পত্তি ৭৭ শতাংশ
ইঞ্জিনিয়ার রিপন মৈশানের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বিএনপি
মুন্ডা সম্প্রদায়ের জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে সমন্বিত নীতি সহায়তার অঙ্গীকার পরিবেশ উপদেষ্টার
১০