
মো. মঞ্জুর মোর্শেদ
মুন্সীগঞ্জ, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): জেলার প্রধান অর্থকরি ফসল আলু। দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সীগঞ্জ। প্রতি বছর প্রান্তিক চাষীরা আলু চাষে লোকসানে পরে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও আলু আবাদ মৌসুমে তারা আবাদে সক্রিয় হয়ে উঠে। পুঁজি হারিয়ে আবারো লাভের মুখ দেখার আশায় আলু চাষ করে।
জেলায় প্রান্তিক আলু চাষীরা চলতি মৌসুমে আলু আবাদের জন্য জমিতে জমে থাকা কচুরিপানা, ধান গাছসহ অন্যান্য আগাছা পরিস্কার পরিছন্ন করে আবাদের প্রস্তুতি চলছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে আলু আবাদের কাজ শুরু হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. হাবিবুর রহমান বাসসকে জানান, চলতি আলু মৌসুমে জেলায় ৩৪ হাজার ৬ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৯ হাজার ৫৮৭ হেক্টর, টংগীবাড়ীতে ৯ হাজার ৭০ হেক্টর, শ্রীনগরে ১ হাজার ৯৪৬ হেক্টর , সিরাজদিখানে ৮ হাজার ৯৫৮ হেক্টর, লৌহজংয়ে ৩ হাজার ১০৭ শত হেক্টর এবং গজারিয়ায় ১ হাজার ৯৯৮ হেক্টর জমি। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫ মেট্রিক টন আলু। জেলায় গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়, ফলন হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, জেলায় ৩৪ হাজার ৬ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের জন্য বীজ আলুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার ১৮০ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন। জেলার হিমাগারগুলোতে বীজ আলু রয়েছে ৭৯ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন যা চাহিদার চেয়ে বেশি। চলতি আলু মৌসুমে কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিসেম্বর প্রান্তিকে জেলায় ৪ হাজার ৪১ মেট্রিক টন ইউরিয়া, ১ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন টিএসপি, ৫ হাজার ২৬ মেট্রিক টন ডিএফপি এবং ১ হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার কাঠাদিয়া গ্রামের জিয়াউর রহমান বাসসকে জানান, বৃষ্টি না হলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমি আবাদ উপযোগী হয়ে উঠবে, তখন পুরোদমে আলু আবাদ শুরু হবে।
সদর উপজেলার রামপার ইউনিয়নের পলাশ বেপারী জানান, সার এবং বীজ সংকট না থাকায় আলু চাষে খরচ কম পরবে কৃষক লাভবান হবে।
জেলা প্রশাসক সৈয়দা নুমহল আশরাফী সার ও আলু বীজ ডিলারদের নিয়ে সমন্বয় সভায় কৃত্রিম সংকটের বিষয়ে সতর্কবার্তা দেন।
জেলা প্রশাসক সভায় বলেন, আলু আবাদ মৌসুমে বাজার মনিটরিং টিম সক্রিয় থাকবে। বীজ এবং সার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করলে তার বিরদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।