শিরোনাম
॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১৮ জানুয়ারি,২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রামদিয়া বাজার-ফুকরা লঞ্চঘাট সড়ক যোগযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের দ্বার উম্মোচন করেছে। বাণিজ্যিক কেন্দ্র রামদিয়া বাজারের সাথে কাশিয়ানী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ও নাড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে। এতে এলাকার মানুষের যাতায়াত পণ্য পরিবহন ত্বরান্বিত হয়েছে। রামদিয়া বাজারের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারিত হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, জেলার কাশিয়ানী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র রামদিয়া বাজার। রামদিয়ায় একটি সরকারি কলেজ, ২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি খাদ্য গুদামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি জেলার বিল এলাকার সবচেয়ে বড় বাজার। প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট এখানে গড়ে ওঠেনি। সপ্তাহে এখানে ২ দিন হাট বসে। এখানকার ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রামদিয়া বাজার-ফুকরা লঞ্চঘাট সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া বাজার থেকে ফুকরা লঞ্চঘাট পর্যন্ত এ সড়ক বিস্তৃত। সড়কটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের সাথে যুক্ত হয়েছে। ঢাকা-খুলনা মহাড়কে ফুকরা সেকশন নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনা প্রবণ ওই স্থানে সেকশন নির্মাণ করে দেওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে। এলাকার পণ্য পরিবহন ও বাজারজাত করণ সহজ হয়েছে। কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন।
মাইক্রো চালক রুহুল আমিন (৫০) বলেন,রামদিয়া-ফুকরা লঞ্চঘাট সড়ক নির্মিত হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। এ সড়ক ব্যবহার করে গোপালগঞ্জ, খুলনা, ঢাকা, ফুকরা লঞ্চঘাট, সাতপাড় স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারি। নড়াইল জেলার লোহাগড়ার সাথে যোগাযোগ সহজ হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামের কৃষক তামিম হোসেন (৩০) বলেন, রামদিয়া বাজার- ফুকরা লঞ্চঘাট সড়ক আমাদের যাতায়াত সহজ করে দিয়েছে। এখন আমরা সহজেই কৃষি পণ্য ও মৎস্য সম্পদ পরিবহন এবং ঢাকা-খুলনা বাজরজাত করতে পারছি। আমরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি। এতে আমাদের লাভ বেড়েছে।
রামদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন,রামদিয়া বাজার –ফুকরা লঞ্চঘাট সড়ক রামদিয়া বাজারের সাথে গ্রাম গুলোর কানেকটিভিটি বেড়েছে। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেরার সাথে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। কৃষকরা সহজেই তাদের পণ্য এখানে এনে বিক্রি করতে পারছেন। পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতে দুর্ভোগ কমেছে। এ কারণে ব্যবসা আরো গতিশীল হয়েছে। লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।
কৃষক শীতল বিশ্বাস (৫২) বলেন, আগে কৃষি পণ্য বাজারে নিতে দুর্ভোগের শেষ ছিল না। এখন বাইপাস সড়ক, সাতপাড় সড়ক, ফুকরা লঞ্চঘাট সড়ক ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ব্যবহার করে আমরা সহজে পণ্য বাজারজাত করতে পারছি। এছাড়া আমাদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনও সহজ হয়েছে। বড় বড় বাজার ধরতে পেরে আমরা পণ্যের ন্যয্যমূল্য পেয়ে বাড়–তি টাকা ঘরে তুলতে পারছি। এ জন্য সড়ক বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই।
রামদিয়া বাজারের বাসিন্দা এমদাদ শেখ (৫০) বলেন, রামদিয়া- ফুকরা লঞ্চঘাট সড়কটি আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক উপকারে আসছে। পাশাপাশি এখানে রামদিয়া খালের ওপর নব নির্মিত ব্রিজ ও বাজার বাইপাস সড়ক খুবই নয়নাভিরাম। বিলের মধ্যে এটি মনোরম সৌন্দর্য বর্ধণ করেছে। এখানে আমি বিকেলে ঘুরতে যাই। মুক্ত বাতাস গ্রহণ করি। রাস্তার ঢালে বসে সময় কাটাই। এটি এখন আমাদের এলাকার মানুষের চিত্ত বিনোদনের স্থানে পরিণত হয়েছে। বিকেল হলেই একটু প্রশান্তি পেতে বিভিন্ন বয়সের মানুষ এখানে ছুটে আসেন। এটিকে ঘিরে বসার জায়গা, ক্যান্টিন ও বাহারী বৃক্ষ রোপণ করা হলে এটির আকর্ষণ আরো বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে। এত সুন্দর উন্নয়ন করার জন্য আমি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানাই।