শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবদান রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় ৪র্থ শিল্পবিপ্লব ও প্রযুক্তির জয়জয়কার চলছে। সেই গুরুত্ব উপলব্ধি করে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের কেউ যেটা কল্পনা করেনি সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ম্যানিফেস্টো ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। আমি প্রত্যাশা করি চুয়েটও স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে দেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখবে। বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সবধরনের সূচকেই এগিয়ে যাচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে আমরা এগিয়ে আছি। মানবিক বাংলাদেশ গঠনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা রাখতে হবে।’
ড. হাছান মাহমুদ আজ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের আয়োজনে তৃতীয়বারের মতো তিনদিনব্যাপী ‘ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিসিই)-২০২৩’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চুয়েটের শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর মিলনায়তনে আয়োজিত কনফারেন্সে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকদের সমন্বয়ে চুয়েটের এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স দেশে জ্ঞানভিত্তিক আধুনিক ও উন্নত সমাজ গঠনে সহায়তা করবে।’
কনফারেন্সে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, দ্য ইনস্টিউটিশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি)-এর প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, আই-ট্রিপল-ই উইমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ওয়ার্ল্ড চেয়ার ও বুয়েটের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. সেলিয়া শাহনাজ।
চুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিশন গ্রহণ করেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেই ভিশন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চুয়েট থেকে বিশ্ববাজারের উপযোগী করে প্রকৌশলী তৈরি করার লক্ষ্যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘গবেষকরাই পারে দেশকে বদলে দিতে। তাদের উদ্ভাবনের মাধ্যমে যেকোনো উন্নয়ন টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইনোভেটিভ বাংলাদেশ তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের সরকারের ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে।’
আইইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিশন নিয়ে কাজ করছেন। সরকারের এই ভিশন বাস্তবায়নে দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রকৌশলীরাই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে আমি বিশ্বাস করি।’
ইসিসিই-২০২৩ এর অরগ্যানাইজিং চেয়ার এবং আই-ট্রিপল-ই বাংলাদেশ সেকশনের চেয়ার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কনফারেন্সের টেকনিক্যাল চেয়ার ও চুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান, অরগ্যানাইজিং সেক্রেটারি ও ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ, টেকনিক্যাল সেক্রেটারি ও ইটিই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সম্পদ ঘোষ ও সিএসই বিভাগের প্রভাষক মৌমিতা সেন শর্মা।
এবারের কনফারেন্সে দেশ-বিদেশের প্রায় ৩৫০ জন গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষক, উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী ও প্রফেশনালস অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে ৯টি কী-নোট স্পিচ, ৯টি ইনভাইটেড স্পিচ, ২৮টি টেকনিক্যাল সেশন এবং ৫২৩টি নির্বাচিত প্রবন্ধ থেকে ১৩৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এতে ৩টি ক্যাটাগরিতে ১১টি পেপারকে বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। কনফারেন্সের টেকনিক্যাল স্পনসর ছিল আই-ট্রিপল-ই, বাংলাদেশ সেকশন।