বাসস
  ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৩:৪৭

শেরপুরের সবুজ মিয়ার ছাদ বাগান তাক লাগিয়ে দিয়েছে

শেরপুর, ৪ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : বাসার ছাদে টবে, ড্রামে, ফলের প্লাস্টিকের বাক্সে ও ইটের হালকা দেওয়ালের মাঝে অর্ধশত প্রজাতির শাক, সবজি, মসলা, ফল ও ঔষুধি গাছের বাগান করে কৃষি বিভাগকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নকলা উপজেলার গৌড়দ্বার ইউনিয়নের গৌড়দ্বার বাজারের সবুজ মিয়া।
সবুজ মিয়া উপজেলার টালকী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত। চাকরির ফাঁকে নিজের বাসার ছাদে ফুল, ফল, শাক, সবজি, মসলা ও ফলের বাগান করেছেন। এবছর তার ছাদ বাগানে পেঁয়াজ রসুনের আবাদ বেশি করা হয়েছে। সবুজ মিয়ার বাসার ছাদ দেখে মনে হবে এযেন পেঁয়াজ রসুনের মাঠ।
তার ছাদ বাগানে পেঁয়াজ ও রসুনের পাশাপাশি ফলের মধ্যে উন্নত জাতের আম, মালটা, কমলা, ড্রাগন, পেয়ারা, আমড়া ও আপেল কুল এবং সবজির মধ্যে টমেটো, বারোমাসি শিম, মিষ্টি লাউ রয়েছে।
এছাড়া মৌসুম ভেদে ঝিঙা, মরিচ, বারোমাসি মরিচ, করলা, ডাটা, বাঙি ও তরমুজসহ বিভিন্ন শাক সবজি রোপণ করে। ছাদে চাষ করা পেঁয়াজ ও রসুন দিয়েই তার সারা বছর চলে। তিনি ছাদ বাগানে কোন প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না। জৈব সার হিসেবে চা-পাতা, গোবর, খৈল, কম্পোস্ট ব্যবহার করেন। ফলে তার উৎপাদিত শাক সবজি সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে তিনি জানান।
ছাদ বাগানের প্রতি আগ্রহী হওয়ার কারন হিসেবে জানান, প্রথমে তার ছাদে কয়েকটি টপে সূর্যমুখী বীজ লাগান। সূর্যমুখীর গাছ ও ফলন দেখে ছাদে শাক সবজিসহ অন্যান্য মসলা, ফল ও ঔষুধি গাছের প্রতি তার আগ্রহ জাগে। এরপরে হাইব্রিড মুলার বীজ বপন করেন তিনি। তিনি বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে ছাদবাগান করছি। আমার বাগানে সারাবছর শাক-সবজি ও ফুল-ফল থাকে। আমি সারাদিন চাকরি করি তাই, সারাদিন সময় দিতে পারিনা। তবুও বাসার ছাদে উন্নত জাতের আম, মালটা, কমলা, ড্রাগন, পেয়ারা, আমড়া, পেঁপে, আপেল কুল এবং সবজির মধ্যে টমেটো, বারোমাসি ,শিম, মিষ্টি লাউ, বেগুন, টমেটো, পেঁপে, আমড়া, মরিচ ও অ্যালোভেরা, ঝিঙা, মরিচ, বারোমাসি মরিচ, করলা, ডাটা, বাঙি ও তরমুজসহ বিভিন্ন শাক-সবজি, ফুল-ফল রোপণ করে আসছি।
অফিসে যাওয়ার আগে ও অফিস থেকে ফিরে বাগানে সময় দেই। এ মৌসুমে পেঁয়াজ বেশি লাগিয়েছি। পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুন লাগিয়েছি। ধারণা করছি প্রায় একশ’ কেজি পেঁয়াজ ও ১০/১৫ কেজি রসুন উৎপাদন হবে। এ পেঁয়াজ ও রসুন দিয়েই আমার সংসারের সারাবছর চলবে। আগামীতে পুরো ছাদে বাগান করবেন, এতে বাজারজাত করাও সম্ভব বলে তিনি আশাব্যক্ত করেন।
তার ছাদ বাগানে উৎপাদিত ফুল-ফল ও শাক-সবজি একদিকে যেমন নিজের পরিবারের নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে; অন্যদিকে ছাদ বাগানের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন অন্যরাও। 
তার সফলতা দেখে জড়াকান্দার আব্দুল জুব্বারসহ অনেকে আগ্রহী হয়ে তাদের নিজ নিজ ছাদে শাক সবজি চাষ করে সফল হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বর্তমানে শহর ছাড়াও গ্রাম অঞ্চলে অনেকের দালান বাড়ি হচ্ছে। এসব বাড়ির ছাদে শাক-সবজি ও উন্নত জাতের ফলের বাগান করতে কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, যে জমি টুকুতে বাসা তৈরি করা হয়, ওই বাসার ছাদে নকলার সবুজের মতো সবাই নিরাপদ শাক-সবজি ও ফুল-ফলের বাগান করলে এক জমিতেই বাসা ও বাগান হয়ে যায়। এতে আবাসনের পাশাপাাশি জমির উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত হবে। ফলে জমির সুষ্ঠু ব্যবহারের পাশাপাশি পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মিটবে ও বাড়তি আয়ের পথ সৃষ্টি হবে।