বাসস
  ০৪ জুন ২০২৩, ১৭:৩১

প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাজেট বৃদ্ধি করার আহ্বান

ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৩ (বাসস): প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতা দিতে কর্মরত ১১ সংস্থার নেতৃবৃন্দ বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার তুলনায় বাজেট বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। 
তারা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাজেট বরাদ্দ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণায় মন্ত্রণালয় ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ খুবই প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোন উদ্যোগ বাজেটে নেই। 
স্মার্ট সোসাইটি বিনির্মাণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য “কাউকে পেছনে ফেলে নয়” এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং সকলের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার কথা অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তার প্রতিফলন এই বাজেটে নেই। 
অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনসহ ১১টি সংস্থার উদ্যোগে আজ “জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান” শীর্ষক বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সভাটি আজ সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে অনুষ্ঠিত হয়। 
যৌথভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত এসভার আয়োজন করে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ, জাতীয় তৃণমূল প্রতিবন্ধী সংস্থা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল এফেয়ার্স কানাডা, সীতাকুন্ড ফেডারেশন, এসডিএসএল, টার্নিং পয়েন্ট ফাউন্ডেশন, মামা ক্যাশ ও উইমেন উইথ ডিজএ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। 
অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন চেয়ারপারসন মহুয়া পাল এর সভাপতিত্বে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বরাদ্দের উপর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন। ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক নাসরিন জাহান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রতিক্রিয়া সভায় ডাব্লিউডিডিএফ নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি ১১টি দাবি পুনর্বিবেচনার জন্য তুলে ধরেন। 
আলবার্ট মোল্লা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দরিদ্র প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৩ লাখ ৬৫ হাজার থেকে ৫ লাখ ৩৫ হাজার বাড়িয়ে ২৯ লাখ করায় এবং প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৯০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা করায় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান। 
তিনি ন্যাশনাল একাডেমী ফর অটিজম এন্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজএবিলিটি প্রকল্পে ৮৯.৫৭ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৯৭.৫৮ কোটি টাকা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রকল্পে ২৮৭.২৩ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। 
এছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা অভিভাবকের ক্ষেত্রে প্রত্যেক সন্তানের জন্য করমুক্ত সীমা ৫০ হাজার টাকা বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রতিবন্ধিতা খাতে বরাদ্দ সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাত্র ২.৯৪% এবং মোট বাজেটের ০.৪৯% যা খুবই অপ্রতুল। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা অপরিবর্তিত (৮৫০ টাকা) রয়েছে যা বর্তমান দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় খুবই সামান্য। বিগত ৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে (১ লক্ষ) যা যৌক্তিক নয়।