বাসস
  ০৪ জুন ২০২৩, ১৯:৪০

শ্যামপুরে নির্মিত ৫৪টি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম ঘরের উদ্বোধন করলেন শিল্পমন্ত্রী ও মেয়র তাপস

ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৩ (বাসস) : রাজধানীর শ্যামপুরে নির্মিত ৫৪টি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রধান অতিথি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বিশেষ অতিথি হিসেবে আজ রোববার এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম’ উদ্বোধন করেন।
এসময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, অস্থায়ীভাবে নির্মিত এই রাসায়নিক গুদাম খুব শিগগিরই প্রকৃত ব্যবসায়িদের বরাদ্দ দেয়া হবে। রাজধানী সংলগ্ন টঙ্গীতেও এরকম  আরো গুদাম নির্মিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) উদ্যোগে গৃহীত ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নি দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্পের আওতায় ৬ দশমিক ১৭ একর জমির উপর ৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৪টি গুদাম ঘর ও অফিসের জন্য তিন তলা বিশিষ্ট ২টি ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে জিওবি তথা সরকারি অনুদান রয়েছে ৫৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং বিসিআইসি দিয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের ব্যয় ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা নির্ধারন করা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান ‘নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড ৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা খরচ করে এ প্রকল্পের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করেছে। এতে, সরকারের প্রায় ৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার স্থানীয় সংসদ সদস্য  (ঢাকা-৪ আসন) সৈয়দ আবু হোসেন, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মো: আব্দুল্লাহ আল মাকসুস এবং বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান মো: সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী পুরান ঢাকার ‘নিমতলী’ ও ‘চুরিহাট্টা’  ট্রাজেডীর উল্লেখ করে বলেন, এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। 
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তায় শ্যামপুরে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ কাজ সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছে। প্রকৃত ব্যবসায়িদের নিকট অস্থায়ীভাবে নির্মিত এই রাসায়নিক গুদাম বরাদ্দ দেয়া হবে। মন্ত্রী প্রকাশ আশা করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে পুরান ঢাকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। 
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, রাসায়নিক পদার্থসহ বিস্ফোরক  দ্রব্য রাখার উপযোগি করে শ্যামপুরে আলাদা গুদামঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থ ও বিস্ফোরক  দ্রব্য  শ্যামপুরে নির্মিত গুদামে স্থানান্তর করা হবে। 
তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে বিশেষ করে পুরাতন ঢাকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আমি আশা করছি, এ সংক্রান্ত নীতিমালাটি (পুরান ঢাকা রাসায়নিক দ্রব্যাদি স্থানান্তর নীতিমালা) যেন দ্রুত প্রণয়ন করা হয়।’ 
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘এফবিসিসিআই  ও ঢাকা চেম্বারের নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধি যারা এখানে আছেন, তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে রাসায়নিক ও বিস্ফোরক দ্রব্য দ্রুত স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে। এ নীতিমালা করতে যেন আবার কয়েক বছর সময় লেগে না যায় সেজন্য নজরদারী বজায় রাখতে আমি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবকে অনুরোধ করছি। একটি সুনির্দিষ্ট সময়, যেমন ১৫ দিন বা এক মাসের মধ্যে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা এবং সেটি যেন ব্যবসাবান্ধব হয়-সেবিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সকল বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য ধীরে ধীরে স্থানান্তর হবে। একটি দুর্যোগপূর্ণ নগরী হিসেবে নয়, আমরা চাই ঢাকা হোক দুর্যোগ সহনশীল বাসযোগ্য একটি নগরী।’