শিরোনাম
ঢাকা, ৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পট পরিবর্তন হলেও বিপদ এখনও পুরোপুরি কেটে যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন, সতর্ক থাকবেন। বিপদ শেষ হয়ে যায়নি। নতুন করে বিপদ আসার সম্ভাবনা আছে। গণতন্ত্রকে আবার আঘাত ও নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের আয়োজন করবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেন, নির্বাচিত সরকারই সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সরকার। কারণ, সেই সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে আসে এবং জনগণের জন্য কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের কথা আমরা কেন বারবার বলি। নির্বাচন হচ্ছে একটি দরজা। যে দরজার মধ্য দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যায়।
মির্জা ফখরুল বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সবাই সজাগ-সতর্ক থাকবেন। দলকে আরও দৃঢ় করেন। বিপদ শেষ হয়ে যায়নি। নতুন করে বিপদ আসতে পারে। গণতন্ত্রকে আঘাত করার, নষ্ট করার চক্রান্ত আবার চলছে।
বিএনপি মহাসচিব জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস সম্পর্কে বলেন, ৭ নভেম্বরের বিদ্রোহ-বিপ্লব জাতিকে নতুন করে জাতিসত্তাকে চিনতে শিখিয়েছিল, নতুন করে দেশকে নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। বিপ্লবের নায়ক ছিলেন সিপাহি ও সাধারণ জনগণ। তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি দায়িত্ব না নিলে দেশের ইতিহাস কী হতো বলা যায় না।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব পুরো বিভক্ত জাতিকে তখন ঐক্যবদ্ধ করেছিল। মানুষ নতুন আশার আলো, নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল।
মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগের শাসন সম্পর্কে বলেন, ‘এই দেশ ও জাতির ওপরে নির্মমভাবে তারা অত্যাচার করেছে। রাজনৈতিক কাঠামোকে ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। ব্যাংক লুট হয়েছে। প্রতিটি জায়গায় দুর্নীতি বেড়েছে। সেই ভয়াবহ অবস্থা থেকে ছাত্র-জনতার দৃঢ়তায় অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছি।’
বিএনপি মহাসচিব সামনে আরও সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পার হতে হবে জানিয়ে বলেন, ‘সবাই মিলে একটি অন্তর্র্বতী সরকার গঠন করেছি। তাদের এই আশায় দিয়েছি, যে তারা অতিশিগগিরই যে সংস্কারগুলো করা দরকার অর্থাৎ হাসিনা যেগুলো ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, যে জঞ্জাল তৈরি করে দিয়ে গেছে, সেগুলোকে সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেবেন।’
গুম হয়ে যাওয়া বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘১৭ বছর ধরে এই প্রজন্মকে, আমাদের সন্তাদের ভুল ইতিহাস শেখানো হয়েছে। এই সময়ে স্কুল-কলেজে যারা পড়েছে, তারা ৭ নভেম্বরের সিপাহি-জনতার বিপ্লবের ইতিহাস জানে না। আমাদের দায়িত্ব নিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে সেই ইতিহাস শেখাতে হবে।’
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে তরুণদের অনুপ্রেরণা ছিলেন তারেক রহমান। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অন্তত হাসিনাকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করা গেছে। আমরা হাসিনামুক্ত হতে পেরেছি। ভবিষ্যতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়া হবে।’
অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় মহিলা দলের সহ-সভাপতি ইয়াসমিন আরা হক, নাজমুন নাহার বেবি ও নেওয়াজ হালিমা আরলি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান ও যুগ্ম সম্পাদক শাম্মী আকতার প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভায় রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন এলাকার মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।