বাসস
  ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:১৪

অবৈধ টাকা হালাল করতে শেখ তাপস মৎস্য চাষে আয় দেখিয়েছেন ৯৫ কোটি টাকা

শেখ ফজলে নুর তাপস। ফাইল ছবি

// কাশেম মাহমুদ //

ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): দুর্নীতি মাধ্যমে অর্জিত টাকা হালাল করতে শেখ পরিবারের সদস্য শেখ ফজলে নুর তাপস মৎস্য চাষির খাতায় নাম লেখিয়ে রাতারাতি বনে যান প্রায় শতকোটি টাকার মালিক। পুকুরের মৎস্য চাষ থেকে মাত্র ৩ বছরে আয় দেখান ৯৫ কোটি ২৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩১ টাকা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাল জালিয়াতির চুক্তিতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ভিটি, নাল ও বাগান শ্রেণিভুক্ত জমিকে পুকুর হিসেবে লিজ গ্রহণ দেখিয়ে রাতারাতি মৎস্য চাষি বনে যান শেখ তাপস।

বাসস’র হাতে আসা তথ্য প্রমাণে উপরোক্ত তথ্য পাওয়া যায়। দেখা যায়, শেখ ফজলে নুর তাপস ব্যারিস্টার হিসেবে ২০০১ সাল হতে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০১০ সাল হতে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে আইন ব্যবসা পরিচালনা করেন। আইন পেশায় থেকে যা আয় করেছেন, তার শত গুন বেশি আয় দেখা যায় সংসদ সদস্য ও মেয়র হওয়ার পর।

তাপস ২০০৯ সালে নবম সংসদে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৯ সালে একাদশ সংসদে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০২০ সালের ১৬ মে হতে সালের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার স্ত্রী আফরিন তাপসকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্ত্রীর হিসাব বিবরণীতেও মৎস্য ব্যবসায়ী, ফ্ল্যাট, প্লটের মালিক, ব্যাংকের আয়সহ বিপুল সম্পদ দেখানো হয়েছে।  তাদের দুই সন্তান শেখ ফজলে নাসোয়ান ও শেখ ফজলে নাওয়ারের নামে সম্পদ রয়েছে।

দুদকের তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম ইতোমধ্যে শেখ ফজলে নুর তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন তাপসের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। তদন্ত টিমে রয়েছেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান এবং উপ-সহকারী পরিচালক আইরিন আক্তার। দুদক সূত্র জানান, তারা শেখ ফজলে নুর তাপস, তার স্ত্রী আফরিন তাপসসহ পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর এবং নগদ টাকার অনুসন্ধানে নেমেছে ।

তদন্তে দেখা যায়, তাপসের নামে পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে ১ নম্বর সেক্টরে ১০২/এ সড়কে ১০ কাঠার প্লট, মাদারীপুর হাউজিং এস্টেটে ৫ কাঠার জমি এবং বনানীতে জে ব্লকে ১৮ নম্বর সড়কে ৭০ নম্বর হোল্ডিং-এর ৫ কাঠা জমির ওপর ৫ তলা ভবন রয়েছে। এসবের আনুমানিক মূল্য দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৪৬ হাজার ২০৭ টাকা।

ঢাকার ধানমন্ডিতে তার স্ত্রীর নামে কেনা ফ্ল্যাটে বসবাসকারী তাপস মধুমতি ব্যাংকের মালিকানার পাশাপাশি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার একজন মৎস্যচাষি হিসেবে তার আয়কর নথিতে বিপুল টাকা ও সম্পদের অর্জন দেখিয়েছেন। দুদকের জনৈক কর্মকর্তা জানান, মূলত আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ তাপস ও তার পরিবারের সদস্যরা অনৈতিকভাবে উপার্জিত টাকা ও সম্পদ বৈধ করার অভিপ্রায়ে মৎস্য চাষের সুবিধা গ্রহণ করেন। সরকারের আয়কর নথিতে মৎস্য চাষি হিসেবে নিজেদের দেখাতে গিয়ে তারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত তিনি ও তার স্ত্রী মৎস্যচাষি ছিল। এর আগে এবং পরে তাদের আর মৎস্য চাষ ছিল না।

শেখ তাপসের আয়কর নথিতে দেখা যায়, তিনি ২০১২-১৩ অর্থবছরে মৎস্য চাষ থেকে আয় করেছেন ৪১ কোটি ২৬ লাখ ৫২৫ টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আয় করেছেন ১৮ কোটি ৬ লাখ ১ হাজার ২৫৯ টাকা এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মৎস্য চাষে আয় করেছেন ৩৫ কোটি ৯২ লাখ ৪২ হাজার ২৪৭ টাকা। অথচ ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে তার মোট আয় ছিল মাত্র ১৫ লাখ ২৬ হাজার ১৮১ টাকা, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৬ লাখ ৬০ ৯৪৭ টাকা। এরপর থেকে পুকুর চুরির মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছের প্রবাদ বাক্য শেখ তাপসের ভাগ্যকে পরিবর্তন হওয়ার কথা জানান তদন্ত টিম।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, টুঙ্গিপাড়ার পুকুরে মৎস্য চাষ করে মাত্র তিনবছরে আয় করেছেন ৯৫ কোটি ২৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩১ টাকা। অথচ দুদকের তদন্তে দেখা যায় একটি ভিটের বাগানবাড়িতে তিনটি পুকুর থাকলেও ১১টি পুকুর ৪৭ একর নাল জমি দেখিয়ে এই মৎস্য চাষের আয় দেখানো হয়।

তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানান, এতদিন গল্পে পুকুর চুরির কথা শুনেছি। এবার সত্যি-সত্যি দেখলাম পুকুর চুরি কাকে বলে। অনেকটা ভরাট তিনটি পুকুরকে ১১টি পুকুর বানানো হয়েছে। নাল জমিকে মাছের ঘের দেখিয়ে মৎস্য চাষ দেখানো হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়ার শেখ নুরুল হকের পুত্র শেখ ফজলুর রহমান মারুফের কাছ থেকে ২০১১ সালের ১ জুলাই তিনবছরের লিজ চুক্তিতে এসব পুকুর ও নাল জমি নন-জুডিশিয়াল অ-রেজিস্ট্রিকৃত চুক্তিতে লিজ নেন শেখ ফজলে নুর তাপস। পরবর্তীতে দেখা যায় ১১টি পুকুরের মধ্যে তিনটি পুকুর ২০১২ সালের ১ জুলাই অর্থাৎ একবছর পর অপর এক অ-রেজিস্ট্রিকৃত চুক্তিতে শেখ ফজলে নুর তাপস তার স্ত্রী আফরিন তাপসকে দুইবছরের জন্য নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি দেখিয়ে মৎস্য চাষের লিজ দেন। শেখ তাপস শেখ ফজলুর রহমান মারুফের সঙ্গে এসব চুক্তি সম্পাদন করলেও দুদকের তদন্তে দেখা যায়, এসব জমির বিএস রেকর্ডপত্র সঠিক নেই। কিছু জমি শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমদ গং, কাজী শাহজাহান গং, রাজকৃষ্ণ ও শুকদেব বিশ্বাসের নামে রয়েছে। ফলে লিজ চুক্তিসহ কাগজপত্র জালজালিয়াতির মাধ্যমে সম্পাদিত বলে দুদকের তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে নিজের প্রতিষ্টিত মধুমিতা ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ২৬টি এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক মতিঝিল শাখায় একটি হিসাবের সন্ধান পেয়েছে। হিসাবগুলোতে ৩০৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫২৮ টাকা জমা হয়েছে। সেখান থেকে উত্তোলন হয়েছে ২৩৪ কোটি ৮২ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫০ টাকা। অর্থাৎ ৫৩৯ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার ২৭৮/- টাকা লেনদেন করেছেন। একাউন্টগুলোতে এখন স্থিতি আছে ৬৯ কোটি ৫০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭৪ টাকা।  

এছাড়া মধুমতি ব্যাংক পিএলসি, মতিঝিল শাখার আরএফসিডি) হিসাব নম্বর-১১০১১৫৬০০০০০০০৫ এর অনুকূলে শেখ তাপস ২৩ মার্চ ২০১৭ তারিখ হতে ২৫ জুন, ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত ২ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩৬ মার্কিন ডলার জমা এবং ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯১ মার্কিন ডলার উত্তোলন করেছেন। অর্থাৎ তিনি তার ব্যাংক হিসাবে মোট ৫ লাখ ১৭ হাজার ৫২৭ মার্কিন ডলার লেনদেন করেছেন। বর্তমানে উক্ত হিসাবে ৯ হাজার ৯৪৫ মার্কিন ডলার স্থিতি রয়েছে।

এছাড়া তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি, মতিঝিল শাখার হিসাব নম্বর-০১০৮১১১০০০০০৯০১টি খুলেন ২০০২ সালের ১৯ জুন। হিসাবটি থেকে তিনি এ পর্যন্ত ৪৪৩ বার ৫ লাখ টাকা (পাঁচ লাখ) বা তার বেশি জমা অথবা উত্তোলন করেছেন। উল্লিখিত পরিমাণ টাকা লেনদেন তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে অনুসন্ধান দলের মতামতে উঠে এসেছে। তিনি সংসদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালনকালে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে এসব অর্জিত টাকা বর্ণিত হিসাব সমূহে জমা এবং পরবর্তীতে উক্ত টাকা উত্তোলনপূর্বক হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন মর্মে দুদক প্রমান পেয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শেখ তাপসের নামে মধুমতি ব্যাংকের প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়াররের সংখ্যা ৩ কোটি ৩২ লাখ। যার মূল্য ৩২ কোটি টাকা। এছাড়াও সাড়ে ১২ টাকা দরে ক্রয়কৃত ৮০ হাজার ব্যাংক শেয়ারের মূল্য ১ কোটি টাকা। তার দুটি গাড়ি রয়েছে। যার মূল্য ১ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ২২৫ টাকা। স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে ১ কোটি টাকা, অন্যান্য সম্পদ ১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে ১১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭৭ হাজার ৫৭ টাকার।

দুদক সুত্র জানিয়েছে- মধুমতি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় খোলা ২৬টি একাউন্ট আদালতের নিদের্শনায় লেনদেন অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। একাউন্টগুলো হচ্ছে- ১১০১১২১০০০০০০০২, স্থিতির পরিমান ৪ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৫৬১ টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০০০২ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ২ কোটি ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৬ টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০১৭৭ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমান ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৬২০ টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০২৩৬ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৯ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার ১৯৭ টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০৪৮১ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৩২ লাখ ৭০ হাজার ২৭১ টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০৪৬২ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৮ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ১৩৭ টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০২৯৯ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০৩০০ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০৩০১ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ২ কোটি টাকা, ১১০১২৫৫০০০০০৩০২ হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩০৯ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩১১ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩১২ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩১৭ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩১৮ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ৮২ হাজার ৪৪০ টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২০ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২১ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি ৮২ হাজার ৪৪০ টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২৩ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২৪ এমআইএস হিসাবখাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি ৮২ হাজার ৪৪০ টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২৫ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ২ কোটি টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২৬ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ২ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৮০ টাকা, ১১০১৩৬১০০০০০৩২৮ এমআইএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ৩ কোটি টাকা, ১১০১৩৬৬০০০০০৭৭৯ ডিবিএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১৩৬৭০০০০০১১৭ টিবিএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা, ১১০১৩৬৭০০০০০১৪৫ টিবিএস হিসাব খাতে স্থিতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা এবং প্রিমিয়ার মতিঝিল শাখার ০১০৮১১১০০০০০৯০১ হিসাব খাতে ৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৭ টাকা জমা রয়েছে। এছাড়াও মধুমতি ব্যাংক মতিঝিল শাখার আরএফসিডি একাউন্ট নম্বর-১১০১১৫৬০০০০০০০৫ হিসাব খাতে ৫ লাখ ১৭ হাজার ইউএস ডলার লেনদেনের পর বর্তমানে স্থিতি রয়েছে ৯ হাজার ৯৪৫ ইউএস ডলার।   

অনুসন্ধানকারী দল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে, অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি তার অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। উল্লেখিত লেনদেনসমূহ তার জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না মর্মে প্রতীয়মান হয়। অর্থাৎ তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ তার নামীয় উল্লেখিত হিসাবসমূহে লেনদেন করেছেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাবলিক সার্ভেন্ট ছিলেন এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। যার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা অনুসন্ধানকালে পাওয়া যায়নি। তৎপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(১) (ডি) ও ৫(১) (ই) ধারার অপরাধ করেন, যা উক্ত আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সে কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারার সংযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনয়ন করা যায়।