
ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সার্বিয়ান তেল কোম্পানি ‘এনআইএস’ থেকে রুশ মালিকানা পুরোপুরি বাতিল হলেই প্রতিষ্ঠানটির ওপর থেকে কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। সার্বিয়ার জ্বালানি মন্ত্রী শনিবার এ কথা বলেছেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, সার্বিয়াকে এখন ‘কঠিন’ সিদ্ধান্তের মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে।
বেলগ্রেড থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইউক্রেনের ওপর মস্কোর আক্রমণের জেরে রাশিয়ান জ্বালানি খাতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ২০২২ সালে এনআইএস-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন।
নিষেধাজ্ঞায় সার্বিয়া গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, দেশটি শীতকালীন জ্বালানি সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে। একমাত্র তেল শোধনাগার বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
তাই রাশিয়ান কোম্পানিগুলোকে মালিকানা থেকে সরাতে তড়িঘড়ি করছে সার্বিয়া। এ জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার সুযোগ দিতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছে।
কিন্তু জ্বালানি মন্ত্রী দুব্রাভকা জেদোভিচ হানদানোভিচ জানান, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে বলেছে, প্রথমে রুশ মালিকানার সম্পূর্ণ অবসান ঘটাতে হবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে তারা রাশিয়ান শেয়ারহোল্ডারদের সম্পূর্ণ পরিবর্তন চায়।’
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র সার্বিয়াকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছে সমাধান খুঁজে বের করার জন্য।
এনআইএস-এর ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক রুশ প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম নেফট। এই কোম্পানিটি গত সেপ্টেম্বর তাদের ১১.৩ শতাংশ শেয়ার আরেক রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টেলিজেন্স’-এর কাছে হস্তান্তর করেছে।
অন্যদিকে, সার্বিয়ান রাষ্ট্রের হাতে রয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ শেয়ার। বাকিটা রয়েছে ক্ষুদ্র শেয়ারহোল্ডারদের কাছে।
সার্বিয়া এর আগে কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করতে সক্ষম হলেও গত ৯ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ তা কার্যকর করা শুরু করেছে।
হানদানোভিচ জানান, সরকার এখন এনআইএস অধিগ্রহণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। এ নিয়ে রোববার বিশেষ মন্ত্রিসভা বৈঠক হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ জাতীয়করণের বিপক্ষে, আমরাও অনেকেই তাই। তবে আমরা দেশকে বিপদে ফেলতে পারি না। আগামী দিনগুলোতে হয়তো আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি আমাদের রাশিয়ান বন্ধুরা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করবেন এবং তারা আমাদের এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।’
ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউরোপের হাতেগোনা যে কয়েকটি দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি, সার্বিয়া তাদের অন্যতম। দেশটি রুশ গ্যাসের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।