খুলনাঞ্চলে আমন মৌসুমে সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা

বাসস
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:০৩
খুলনাঞ্চলে চলছে রোপা আমন ধানের কর্তন ও মাড়াইয়ের কর্মযজ্ঞ । ছবি : বাসস

।। মুহাম্মদ নুরুজ্জামান।।

খুলনা, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : খুলনাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে রোপা আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। আবার কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগেই মাঠের ফসল ঘরে তুলতে হবে। তাই কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ধানের ব্যাপক ফলনে কৃষকের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটেছে। একই সাথে তারা শীতের ফসল আবাদেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে আমন মৌসুমে খুলনাঞ্চলের ৪ জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ অঞ্চলের ৪ জেলায় চাষাবাদ হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ।

সূত্র জানায়, গত বুধবার (১২ নভেম্বর) পর্যন্ত এ অঞ্চলে ৫০ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।  যা মোট আবাদকৃত জমির ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। খুলনাঞ্চলে রোপা আমন ধান থেকে ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৯০২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।  

খুলনাঞ্চলের ডুমুরিয়া, দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, রোপা আমন কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

রুপসা উপজেলার কৃষক এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বছর ২৭ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছি। এ থেকে আড়াইশো মণ ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করি। ’

একই উপজেলার কৃষক ইয়াসিন আরাফাত ৩০ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। তিনি বাসসকে বলেন, ‘এবার ৩০০ মণ ধান পাবো।’ 

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কৃষক তৈয়েবুর কাজী বলেন, ‘ক্ষেতের ধান কাটা প্রায় শেষ। একদিকে ধান কাটা অন্যদিকে মাড়াইয়ের কাজ চলছে। তবে শঙ্কায় আছি, কখন বৃষ্টিবাদল নামবে। দ্রুত ঘরে ধান ওঠাতে পারলেই স্বস্তি।’ 
দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাটের কৃষক রবিউল ধান কাটা শেষ হতেই না হতেই শীতের ফসল আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ধান কাটা শেষ। মাড়াইয়ের কাজ চলছে। ধানের সিজন শেষ। এবার ডাল ও শীতের সবজির আবাদের জন্য জমি তৈরি করতে হবে।’

কালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম জানান, কালিয়া উপজেলার সালামাবাদ ইউনিয়নের ধুসহাটি ব্লকের কৃষাণ-কৃষাণিরা রোপা আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে খুশিরর হাসি যেন কান্নায় পরিণত না হয়, তাই দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে তাদের ব্যস্ততা আরও  বেশি। 

তিনি বলেন, রোপা আমন ধানের আবাদ শেষ হওয়ায় কৃষকেরা শীতের রবি শস্য যেমন; তেল ও ডাল জাতীয় ফসল এবং শীতকালীন সবজি আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরাও তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কিশোর আহম্মেদ বাসসকে বলেন, দিঘলিয়া উপজেলাতে চলতি রোপা আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে উপজেলার কৃষকেরা কর্তন ও মাড়াইয়ের কাজ করছে। এ কার্যক্রম মনিটরিংয়ের পাশাপাশি উপজেলার কৃষকদের চাষাবাদের জন্য তেল ও ডাল জাতীয় এবং শীতকালীন সবজি আবাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে দিঘলিয়া উপজেলায় ব্রি-১০৩ ধানের জাতটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি আমন মৌসুমে এই অঞ্চলের চাষাবাদ বেশ সন্তোষজনক। রোপা আমন আবাদের বিপরীতে উৎপাদিত চাল দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ প্রস্তুত
পরিবেশ রক্ষায় খুলনায় বিএনপি প্রার্থীর মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি 
নাটোরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর করতে মাঠ প্রশাসন প্রস্তুত : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাঙ্গামাটিতে বিএনপি’র মতবিনিময় ও গণসংযোগ
ভেনিজুয়েলার ব্যাপারে ‘একরকম’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প
'বিডি ডাইজেস্ট' আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর প্ল্যাটফর্ম বলে শনাক্ত করেছে বাংলাফ্যাক্ট
আন্তর্জাতিক মানের সাইকিয়াট্রিক ইনস্টিটিউট গড়ে উঠবে পাবনায় : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
এস্তেভাও, ক্যাসেমিরোর গোলে সেনেগালকে পরাজিত করেছে ব্রাজিল
টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সেমিনার 
১০