
ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ইরান বৃষ্টিপাত ঘটাতে মেঘ বীজ (ক্লাউড সিডিং) বপন কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরা চলছে।
ইরানের কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ কথা জানিয়েছে।
শনিবার রাতে সরকারি আইআরএনএ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘প্রথমবারের মতো উর্মিয়া হ্রদ অববাহিকায় আজ একটি মেঘ বীজ বপন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।’
মেঘ বীজ বা ক্লাউড সিডিং হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানুষের উদ্যোগে মেঘে কিছু বিশেষ পদার্থ (বীজ) ছোঁড়া হয় যাতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা যায়। এটি মূলত কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঘটানোর চেষ্টা।
উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত উর্মিয়া ইরানের বৃহত্তম হ্রদ। কিন্তু খরার কারণে এটি মূলত শুকিয়ে গেছে এবং একটি বিশাল লবণাক্ত স্তরে পরিণত হয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
আইআরএনএ আরও জানিয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশে আরও মেঘ বীজ কার্যক্রম চালানো হবে।
বিমান থেকে মেঘে সিলভার আয়োডাইড এবং লবণের মতো কণা স্প্রে করা হয় যাতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
গত বছর, ইরান ঘোষণা করেছিল যে তারা এই প্রক্রিয়াটির জন্য নিজস্ব প্রযুক্তি তৈরি করেছে।
শনিবার আইআরএনএ জানিয়েছে, পশ্চিমে ইলাম, কেরমানশাহ, কুর্দিস্তান ও লোরেস্তানে, পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া সংস্থার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী গড়ের তুলনায় চলতি বছর বৃষ্টিপাত প্রায় ৮৯ শতাংশ কম হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ‘আমরা বর্তমানে ৫০ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে শুষ্ক শরৎকাল অনুভব করছি।’
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আলবোর্জ পর্বতমালার তেহরান অঞ্চলে অবস্থিত তোচাল পর্বত ও স্কি রিসোর্টে এই বছর প্রথমবারের মতো তুষারপাতের ফুটেজ দেখা গেছে।
মূলত শুষ্ক দেশ ইরান বছরের পর বছর ধরে দীর্ঘস্থায়ী শুষ্কতার সম্মুখীন হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে তাপপ্রবাহ আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, রাজধানী তেহরানে বৃষ্টিপাত এক শতাব্দীর মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে এবং ইরানের অর্ধেক প্রদেশে কয়েক মাস ধরে এক ফোঁটাও বৃষ্টিও দেখা যায়নি।
অনেক প্রদেশে জলাধারের পানির স্তর রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। এই জলাধারগুলো থেকে পানি সরবরাহ করা হয়।
এই মাসের শুরুতে, প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে শীতের আগে বৃষ্টি না হলে তেহরানের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার মতো অবস্থা দেখা দিতে পারে।
যদিও তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশও কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত উৎপাদনের জন্য ক্লাউড সিডিং ব্যবহার করেছে।