চট্টগ্রাম, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে যানবাহনের বর্ধিত গেটপাস ফি (বাড়তি মাশুল) স্থগিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে বন্দরে সৃষ্ট অচলাবস্থার সাময়িক অবসান হয়েছে।
পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে বর্ধিত ফি স্থগিত থাকবে বলে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন। তবে দুই দিনের কর্মবিরতির কারণে ছয়টি জাহাজ রপ্তানি পণ্য ছাড়াই বন্দর ত্যাগ করেছে।
রোববার বিকেলে পরিবহন শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, ট্রেইলার শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে আমদানি পণ্যের ডেলিভারি বন্ধ ছিল। বিষয়টি দেশের আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই বন্দর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আলোচনা হয়েছে। সরকারি অনুমোদনক্রমে জারি করা গেজেট তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন বা স্থগিত করা সম্ভব নয়। তবে পরিবহন শ্রমিকদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শুধু পরিবহনের ক্ষেত্রে বর্ধিত গেটপাস ফি পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।”
বন্দর সচিব আরও বলেন, “আমরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপারিশসহ প্রস্তাব বোর্ডে পাঠাব এবং পরে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। আপাতত ফি স্থগিত থাকবে।
শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা আশ্বস্ত করেছেন, তারা কাজে ফিরে যাবেন। বর্তমানে বাইরে প্রায় ছয় হাজার ট্রাক-কাভার্ডভ্যান বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে, যা এখন ডেলিভারি ও রপ্তানি কাজে নিয়োজিত হবে।”
বৈঠকের পর বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, “বৈঠকে বর্ধিত প্রবেশ ফি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
আমরা আমাদের সংগঠনভুক্ত সবাইকে কাজে ফিরতে বলেছি।”
তিনি আরও বলেন, “বন্দর চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন, আপাতত ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের জন্য ২৩০ টাকা ফি দিতে হবে না। পূর্বের মতো ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ফিতে গেটপাস নেওয়া যাবে। প্রতিদিন আমাদের ৮-৯ হাজার পণ্যবাহী গাড়ি বন্দরে চলাচল করে।”
চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ফারুক বলেন, “দীর্ঘ আলোচনার পর বন্দর চেয়ারম্যান বর্ধিত গেটপাস ফি স্থগিতের কথা জানিয়েছেন। যেহেতু পূর্বে লিখিতভাবে কার্যকর করা হয়েছিল, তাই স্থগিতের বিষয়টিও লিখিতভাবে জানাতে অনুরোধ করেছি।”
এদিকে কর্মবিরতির কারণে শনিবার ও রোববার এক হাজার একক কনটেইনার রপ্তানি পণ্য ছাড়াই ছয়টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করেছে। কনটেইনারবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। দাবি আদায়ে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরে ভারী যানবাহনের প্রবেশ ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করা হয়। এর প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিকরা শনিবার থেকে ট্রেইলার, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধ রাখেন।