শিরোনাম
ঢাকা (উত্তর), ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখল করা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও আধিপত্য বজায় রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে অস্ত্রাগারে পরিণত করেছিল। ক্যাম্পাসে আর কোনো আধিপত্যবাদের স্থান হবে না, এটাই হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা।
তিনি বলেন,‘বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছিল। চর দখলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখল করা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও আধিপত্য বজায় রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে অস্ত্রাগারে পরিণত করেছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থার কবর রচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজ, আধিপত্যবাদ ও দখলবাজের স্থান হবে না ইনশাআল্লাহ।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন-২০২৪ এর উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ছাত্র আন্দোলনে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক বুলেটের আঘাতে শহিদ আলী রায়হানের পিতা মো. মুসলেহ উদ্দিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন-২০২৪ উদ্বোধন করেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে- জুলাই বিপ্লবে শহিদ হওয়া আবু সাঈদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, ওয়াসিম, উসমানসহ শহিদ পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী আমলের অত্যাচারে আহত ও গুম হওয়া লোকদের পরিবারের সদস্যরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা শামসুল ইসলাম ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিরা।
উদ্বোধনী অধিবেশন জামায়াতের আমির বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসেন বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজ কোনো দুঃশাসন মেনে নেয়নি, সেটা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে প্রমাণিত হয়েছে। স্বাধীনতার সাফল্যকে হাইজ্যাক করে একটা রাজনৈতিক দল দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে রেখেছিল। কিন্তু ছাত্রসমাজ ১৫ বছরের মাথায় তাদের সেই দুঃশাসনকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশের শুভ সূচনা করেছে। বাংলাদেশে আর কোনো আধিপত্যবাদ ও দুঃশাসন এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।’
সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এদেশের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার জন্য ছাত্রশিবিরকে সকল ভয় উপেক্ষা করে ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। ছাত্রশিবির যেভাবে চব্বিশের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে আগামীতেও যে কোনো আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হতে হবে।
সদস্য সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, ড. মুফতি কাজী ইবরাহীম, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শামছুল আলম, তা‘মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণঅধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) ফারুক হাসান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা।
বিদেশি অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনাদোলু গেঞ্জলিক দেরনেই এর সহ-সভাপতি এমরুল্লাহ ডেমির, পেরসাতুয়ান কেবাংসান পেলাযার ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি জুল আইমান, হিকমত ইয়ুথ মিশরের সভাপতি ড. আবদুল্লাহ আহমেদ, ইসলামী বিশ্ব যুব ফোরামের সভাপতি ড. আশরাফ আওয়াদ, আংকাতান বেলিয়া ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি আহমদ ফাহমি মোহাম্মদ সামসুদিন।