বাসস
  ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১৪:১১

লুটনকে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে প্রথম জয়ের দেখা পেল চেলসি

লন্ডন, ২৬ আগস্ট ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : রাহিম স্টার্লিংয়ের জোড়া গোলে লুটনকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে মরিসিও পোচেত্তিনোর অধীনে এবারের প্রিমিয়ার লিগে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে চেলসি। ব্লুজরদের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেছেন নিকোলাস জ্যাকসন। 
মালো গুস্তোর এ্যাসিস্টে স্টার্লিং দুই গোল করার পর জ্যাকসনকে দিয়ে ৭৫ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করিয়েছেন। গত মৌসুমে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারা চেলসিকে এবার টেবিলের উপরের দিকে রাখার লক্ষ্য নিয়ে কোচের পদে আসীন হয়েছেন পোচেত্তিনো। ইংলিশ ফরোয়ার্ড স্টার্লিংয়ের ফর্মে ফেরা চেলসিকে এই পথে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। জুলাইয়ে পোচেত্তিনো চেলসির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। চেলসির হয়ে প্রথম মৌসুমে স্টার্লিয়ের বাজে ফর্মের কারনে ক্যারিয়ার যখন হুমকির মুখে পড়েছিল ঠিক তখনই পোচেত্তিনো যেন ইংলিশ ফরোয়ার্ডের জন্য ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে এসে পোচেত্তিনোর অন্যতম মূল লক্ষ্য ছিল স্টার্লিংয়ের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনা। লিভারপুলের সাথে ১-১ গোলের ড্র দিয়ে প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট হ্যামের কাছে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত হয় ব্লুজরা। লুটনের বিরুদ্ধে তাই ঘরের মাঠে প্রথম জয়ের আকাঙ্খা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন চেলসি বস। শিষ্যরাও তাকে হতাশ করেনি। 
টটেনহ্যাম ও পিএসজির সাবেক এই বসের সামনে এখন অনেকটাই তারুণ্যনির্ভর চেলসি ভরসার জায়গা। ইনজুরির কারনে প্রথম দলের নয়জন রয়েছেন দলে বাইরে। অধিনায়ক রেসি জেমস ও গ্রীষ্মকালীণ চুক্তিতে আসা ক্রিস্টোফার এনকুকু ও রোমেও লাভিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু পোচেত্তিনো লাইন-আপে অন্যতম অভিজ্ঞ স্টার্লিং কাল অন্তত এটুকু প্রমান করেছেন এখনো তিনি ফুরিয়ে যাননি। একইসাথে চেলসিকে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের পর লিগে সবচেয়ে বাজে শুরু থেকেও রক্ষা করেছেন। ১১৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ব্রিটিশ রেকর্ড ফি’তে ব্রাইটন থেকে দলে আসা ইকুয়েডর মিডফিল্ডার মোয়েসিস কেইসেডো কাল প্রথমবারের মত মূল একাদশে জায়গা পেয়েই নিজেকে প্রমান করেছেন। এর আগে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে বদলী হিসেবে অভিষিক্ত হয়ে পেনাল্টি উপহার দিয়ে চেলসির ক্যারিয়ারের শুরুটা স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি কেইসেডো। 
গত মৌসুমের শেষে ট্রান্সফার উইন্ডোতে সাড়ে তিনশ মিলিয়নের বেশী ব্যয় করা চেলসির প্রত্যাশাও ছিল অনেক বেশী। এবারের লিগে নতুন উন্নীত লুটন যেকোন মূল্যেই সর্বোচ্চ আসরে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে মৌসুম শুরু করেছে। দীর্ঘ ৩১ বছর শীর্ষ লিগের বাইরে থাকার পর এমন প্রত্যাশা তারা করতেই পারে। মাত্র পাঁচ বছর আগে লুটন ইংলিশ ফুটবলের চতুর্থ টায়ারের দল ছিল। সবচেয়ে ছোট দল হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে জায়গা করে নেয়া লুটনের সামনে এখন পুরো মৌসুমে রেলিগেশন এড়ানোই মূল চ্যালেঞ্জ। 
ব্রাইটনের কাছে ৪-১ গোলের বিধ্বস্ত হবার মধ্য দিয়ে তাদের প্রিমিয়ার লিগের যাত্রা শুরু হয়েছে। ঘরের মাঠ কেনিলওয়ার্থ রোডের স্টেডিয়াম সংষ্কারের কারনে গত সপ্তাহে বার্নলির বিরুদ্ধে তাদের হোম ম্যাচটি বাতিল হয়ে যায়। যে কারনে কাল তারা দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিল। ম্যাচের শুরুতেই মাত্র ১০ গজ দুর থেকে স্টার্লিংয়ের শক্তিশালী ভলি গোলরক্ষক থমাস কামিনিস্কি লাইনের উপর দিয়ে কোনমতে আটকে দেন। এনজো ফার্নান্দেজের শট বারে লেগে ফেরত আসে। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে জ্যাকসন ও বেন চিলওয়েল লুটনের রক্ষনভাগ ভেঙ্গে এনজোর দিকে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। ১৭ মিনিটে আর কোন ভুল করেননি স্টার্লিং। ডানদিন থেকে তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুর্দান্ত লো ফিনিশিংয়ে তিনি চেলসিকে এগিয়ে দেন। 
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে চিলওয়েল গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। তার পাস থেকে স্টার্লিংয়ের শটটিও গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। এলিজাহ আদেবায়োর পাস থেকে রায়ান জাইলসের ডিফ্লেকটেড শট কোনমতে রুখে দেন চেলসি গোলরক্ষক রবার্ট সানচেজ। ৬৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করে লুটনকে আর প্রতিরোধ গড়ার সুযোগ দেননি স্টার্লিং। মালো গুস্তোর এ্যাসিস্ট থেকে আট গজ দুর থেকে স্টার্লিং বল জালে জড়ান। সাত মিনিট পর স্টার্লিংয়ের ক্রসে সেনেগালি স্ট্রাইকার জ্যাকসন পোস্টের খুব কাছে থেকে বল জালে জড়ালে লিগে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় চেলসি।