বাসস
  ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:০৩
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:০৩

ইফতেখারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে টানা দ্বিতীয় জয় সাকিবের বরিশালের 

চট্টগ্রাম, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ (বাসস) : পাকিস্তানী ব্যাটার ইফতেখার আহমেদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নবম আসরে টানা দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পেল সাকিব-মাহমুদুল্লাহর ফরচুন বরিশাল।
আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বরিশাল ২৬ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জাসর্কে। তৃতীয় ম্যাচে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পেলো  চট্টগ্রাম। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২০২ রান করে বরিশাল। ২৬ বলে অপরাজিত ৫৭ রান করেন ইফতেখার। জবাবে জিয়াউর রহমানের ২৫ বলে অনবদ্য ৪৭ রানে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৬ রান করে ম্যাচ হারে চট্টগ্রাম। 
বিপিএল চট্টগ্রামের পর্বের প্রথম ম্যাচে আজ স্থানীয় জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক শুভাগত হোম। 
ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে এনামুল হক বিজয়ের  সাথে বরিশালের ইনিংস শুরু করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। চট্টগ্রামের পেসার আবু জায়েদের করা প্রথম ওভারেই ৩টি চার মারেন মিরাজ। ওভারে ১৫ রান পায়  বরিশাল। 
স্পিনার তাইজুলের করা তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারলেও, শেষ ডেলিভারিতে ম্লগ সুইপ করে জিয়াউর রহমানকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মিরাজ।  তবে তার আগে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২ বল খেলে ২৪ রানের ইনিংস খেলেন  তিনি। 
দলীয় ৩৩ রানে মিরাজের বিদায়ে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রামের বাঁ-হাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির মুখোমুখি হয়ে প্রথম দুই বলেই দু’টি চার মারেন সাকিব। পরের ডেলিভারিতেই সাকিবের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন মৃত্যুঞ্জয়।  মৃত্যু ঘটে  সাকিবের ৩ বলে ৮ রানের ইনিংসের।  
বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিয়ে ব্যক্তিগত ৩০ রানে আউট হন বিজয়। শ্রীলংকার স্পিনার বিজয়কান্ত বিয়াস্কান্তর বলে আউট হবার আগে ২১ বলে ৫টি চার মারেন তিনি। 
অষ্টম ওভারে দলীয় ৭১ রানে বিজয়ের  আউটের  পর বরিশালের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দু’জনই মারমুখী ব্যাটিং করে  ১১তম ওভারেই বরিশালের স্কোর  রানে  ১শ পৌঁছে দেন। 
১৩তম ওভারে ২৫ রান করা মাহমুদুল্লাহকে শিকার করে চট্টগ্রামকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন জিয়াউর রহমান। ১৭ বলে ২টি করে চার-ছক্কা মারা মাহমুদুল্লাহ চতুর্থ উইকেটে জাদরানের  সাথে  ৩১ বলে ৪৯ রান যোগ করেন।
হাফ-সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে আবু জায়েদের প্রথম শিকার হয়ে ৪৮ রানে থামেন জাদরান। ৩৩ বল খেলে ৪টি চার ও ৩টি ছয় মারেন তিনি।
১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাট্টিকের সম্ভাবনা জাগান আবু জায়েদ। শেষ পর্যন্ত হ্যাট্টিক করতে পারেননি তিনি। তবে ঐ ওভারের শেষ তিন বলে  ছক্কা মারেন বরিশালের পাকিস্তানী ব্যাটার ইফতেখার আহমেদ।   
ইনিংসের সব শেষ ওভারেও ২টি চার ও ১টি ছক্কা হাকিয়ে  ২৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে ২৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন ইফতেখার।  শেষ পর্যন্ত ২৬ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।  ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২০২ রানের সংগ্রহ পায় বরিশাল। চট্টগ্রামের আবু জায়েদ ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেন। 
২০৩ রানের বড় টার্গেটে শুরুটা বেশ ভালই করেন  চট্টগ্রামের দুই ওপেনার পাকিস্তানের উসমান খান ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাক্স ও’দাউদ । ৫ ওভারে ৪৮ রান তুলেন তারা। ১৯ বলে ৩৬ রান করে  বরিশালের পেসার রবিউল ইসলাম রবির বলে আউট হন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা উসমান। ৩টি করে চার-ছয় মারেন তিনি। 
উসমানের আউটের পর রানের গতি কমে যায় চট্টগ্রামের। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার উন্মুখ চাঁদকে নিয়ে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেননি ও’দাউদ। ৩৫ বলে ৩৩ রান তুলেন তারা। ২৯ বলে ২৯ রান করা ও’দাউদকে শিকার করে বরিশালকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন সাকিব। 
ধীরলয়ে খেলা চাঁদ আফগানিস্তানী  করিম জানাতের শিকার  হওয়ার আগে  ২১ বলে ১৬ রান করেন । চাঁেদর বিদায়ের পর শেষ ৭ ওভারে জিততে ১১০ রান দরকার পড়ে চট্টগ্রামের। জিয়াউর রহমানের সাথে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। দলকে ৩০ বলে ৪২ রান এনে দিলেও জয়ের পথটা কঠিন ছিল  চট্ট্রগামের । ৪টি চারে ২১ বলে ২৮ রান করে আফিফ যখন ফিরেন তখন চট্টগ্রামের জিততে ১৭ বলে ৭৩ দরকার পড়ে। 
এরপর চট্টগ্রামের ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন জিয়া। পেসার খালেদ আহমেদের করা ১৮তম ওভারে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৯ রান, করিমের করা ১৯তম ওভারে ১টি ছয় ও ২টি চারে ১৮ রান তুলেন জিয়া। শেষ ওভারে জিততে ৩৬ রান দরকার পড়ে চট্টগ্রামের। শ্রীলংকার চাতুরাঙ্গা ডি সিলভার শেষ ওভারে শুভাগতর ১টি ছক্কায় মাত্র ৯ রান পায় চট্টগ্রাম। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ১৭৬ রান করে ম্যাচ হারে চট্টগ্রাম। ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২৫ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন  জিয়া। ৬ বলে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন শুভাগত। বরিশালের সাকিব-খালেদ-কামরুল ও করিম ১টি করে উইকেট নেন।