বাসস
  ২৩ আগস্ট ২০২৩, ২১:২৬

২০৫০ সালের নাগাদ সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক করিডোর অঞ্চলে মোট বাণিজ্য বেড়ে ২৮৬ বিলিয়ন ডলার হতে পারে : এডিবি

ঢাকা, ২৩ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক করিডোর অঞ্চলে হস্তক্ষেপের কারণে মোট সম্মিলিত বাণিজ্যের পরিমান ২০২০ সালের ৩২ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০৫০ সাল নাগাদ ২৮৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে বিজনেস ইনডিউসড সিনারিও (বিআইএস) অনুযায়ী আশা করা হচ্ছে।
আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত ইকোনোমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট হাইলাইটস শীর্ষক এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়।
 এতে বলা হয়, এই সময়সীমা বরাবর মোট করিডোর অঞ্চল বিজনেস ইনডিউসড সিনারিও (বিআইএস) আউটপুট অনুযায়ী দৃশ্যমান স্বাভাবিক বাণিজ্যের হিসেবে বিভক্ত হবে এবং এভাবে ধীরে ধীরে ২০৩০ সালের মধ্যে মোট করিডোর অঞ্চলের ব্যবসা ১.৪ গুণে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ২.৬ গুণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন এডিবির বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং এবং উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
এডিবির সিনিয়র কান্ট্রি স্পেশালিস্ট সুন চ্যান হং একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন এবং এ আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন এডিবির পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স বিষয়ক পরিচালক সব্যসাচী মিত্র, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) উজমা চৌধুরী এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রতিটি দেশেই করিডোর রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে সর্বোচ্চ উৎপাদন ও অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য ঢাকায় পর্যাপ্ত বাইপাস তৈরি করতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওর অঞ্চলে যোগাযোগ বাড়াতে ফ্লাইওভার নির্মাণ শুরু করেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সর্বোত্তম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন-যাতে শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ তাদের কাজগুলো সহজে সম্পন্ন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ‘সে সুযোগ তৈরি করা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দরকার নেই। বরং ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো রাজনীতিতেও অন্তর্ভূক্তিমূলক এবং মধ্যপন্থী মানসিকতা থাকতে হবে।’ পরিকল্পনামন্ত্রী উল্লেখ করেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ সেবার আরও একটি সুযোগ দিতে হবে।
 বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, অর্থনৈতিক করিডোর দেশব্যাপী বেজা যেসব অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে তাতে গতিসঞ্চার করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরো বলেন, ‘অর্থনৈতিক করিডোর নিঃসন্দেহে অর্থনৈতিক উন্নতি ও আঞ্চলিক একত্রীকরণকে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করবে-যা আমাদের কৃষি বাজারের সাথে আরও ভালভাবে সংযুক্ত হবে ও কৃষকরা ভাল দাম পাবে। এই করিডোরের ফলে পর্যটন ও অন্যান্য খাতগুলিও গতিশীল হবে।’
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। এই করিডোর এই অঞলগুলোকেও প্রবৃদ্ধির নতুন কেন্দ্রে পরিণত করবে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক করিডোর আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াবে।
ভারত বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গতিশীল প্রতিবেশী উল্লেখ করে গিনটিং বলেন, আসিয়ান দেশগুলোর তুলনায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য এখনও কম। তবে, এই করিডোরের উন্নয়ন বাণিজ্য সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর উল্লেখ করেন যে ঋণদাতা সংস্থাটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক করিডোর বরাবর বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করেছে যার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক বিনিয়োগ প্রকল্প এবং খুলনা জেলার নগর উন্নয়ন প্রকল্প।