ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) আজ রাজধানীর গুলশানে তাদের কার্যালয়ে কূটনৈতিক মহল ও প্রধান রপ্তানি বাজারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।
নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান সংশ্লিষ্ট যৌথ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর একটি ত্রিপক্ষীয় সদস্য এবং স্বীকৃত জাতীয় নিয়োগকর্তা সংগঠন হিসেবে বিইএফ আন্তর্জাতিক শ্রমমান, মৌলিক নীতি ও কর্মক্ষেত্রে অধিকার অগ্রসর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অনুষ্ঠান উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যাতে স্থিতিশীল শ্রমবাজার, উন্নত কর্মপরিবেশ, শক্তিশালী শ্রম প্রশাসন এবং উত্তম কর্মস্থল চর্চার মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়।
বিইএফ সভাপতি ফজলে শামীম এহসান তার স্বাগত বক্তব্যে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল শ্রমবাজার ও জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিয়োগকর্তা ও বিনিয়োগকারীদের সম্মুখীন চ্যালেঞ্জগুলোর কথাও উল্লেখ করেন।
বিইএফ-এর মহাসচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফারুক আহমেদ ফেডারেশনের চলমান কর্মকাণ্ডের একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার, দক্ষতা উন্নয়ন, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পরে খোলা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কূটনীতিকরা বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক রূপান্তরে তাদের অগ্রাধিকার, আকাঙ্ক্ষা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
আলোচনায় ২৬ আগস্টের ত্রিপক্ষীয় পর্যালোচনা ও বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়টি উঠে আসে, যা সংস্কারের মূলভিত্তি এবং সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ও আইএলও’র গভর্নিং বডির রোডম্যাপের আওতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতি- আন্তর্জাতিক শ্রমমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সর্বশেষ অক্টোবরের মধ্যে অধ্যাদেশের মাধ্যমে শ্রম আইন সংস্কার পাশ করার অঙ্গীকারকে স্বাগত জানান এবং সমর্থন ব্যক্ত করেন।
তারা আরও উল্লেখ করেন, শ্রম অধিকারের উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াবে এবং কোম্পানিগুলোর সুনামহানির ঝুঁকি কমাবে।
তবে নিয়োগকর্তারা মত দেন, এসব মন্তব্য সদিচ্ছাপ্রসূত হলেও মূলত বহিরাগত দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রত্যাশার প্রতিফলন, যা অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জকে সম্পূর্ণভাবে বিবেচনায় নেয় না।
উল্লেখযোগ্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার, ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান, কানাডার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ডেবরা বয়েস, আইএলও প্রতিনিধি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইডেনের প্রতিনিধি, বিকেএমইএ সভাপতি, বিজিএমইএসহ প্রধান ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতা ও প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এবং বিইএফ কমিটির সদস্যরা।
তারা জোর দিয়ে বলেন, সরকারকে অবশ্যই সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে আরও আলোচনা করে ঐকমত্যভিত্তিক সমাধানে পৌঁছতে হবে।
অংশগ্রহণকারীরা গঠনমূলক আলোচনাকে স্বাগত জানান এবং মর্যাদাপূর্ণ কাজ, প্রতিষ্ঠানের স্থিতিস্থাপকতা এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতা জোরদার করতে এ ধরনের সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার পারস্পরিক আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বিইএফ উন্নয়ন সহযোগীদের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।