ঢাকা, ২০ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): বিশ্বজুড়ে ডিসপ্লে বাজারে স্থবিরতা দেখা গিয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি গবেষণা সংস্থা ওমডিয়া জানিয়েছে, ২০২৫ সালে রঙিন অ্যামোলেড ডিসপ্লে থেকে মোট আয় হবে প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের আয়ের তুলনায় কিছুটা কম। গেল বছর এসব ডিসপ্লে থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৪ বিলিয়ন ডলার।
লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ওমডিয়ার তথ্যমতে, বছরের শুরুটা ডিসপ্লে নির্মাতাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রতিযোগিতার কারণে বিক্রি বাড়াতে অনেক কোম্পানি দাম কমাতে বাধ্য হয়েছে। এতে বিক্রি বাড়লেও কমেছে আয়।
তবে বছরের মধ্যভাগে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। নতুন আইফোন ১৭ সিরিজ এবং চীনের জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্র্যান্ড অপো, ভিভো ও শাওমি’র নতুন মডেলে বড় ডিসপ্লে ব্যবহারের কারণে বাজারে কিছুটা চাহিদা বেড়েছে। এতে বছরের শুরুর তুলনায় আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে ল্যাপটপ, টিভি ও কম্পিউটার মনিটরে এই প্রযুক্তির ব্যবহারও বেড়েছে।
ওমডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত ছয় মাসের তুলনায় জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ডিসপ্লে বিক্রি বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। তবুও ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় আয়ে সামান্য পতন ঘটেছে। গত বছর এই সময়ে আয় ছিল ৩০ বিলিয়ন ডলার, এবার তা দাঁড়িয়েছে ২৯ বিলিয়নে।
ওমডিয়া বলছে, স্মার্টফোনে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি এই ধরনের স্ক্রিন (অ্যামোলেড ডিসপ্লে) ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই নতুন বাজার তৈরির সুযোগ কমে গেছে। দামও ক্রমেই কমছে, ফলে বিক্রি বাড়লেও কোম্পানিগুলো আগের মতো লাভ করতে পারছে না।
তবে আগামী বছর ডিসপ্লে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে আশা করছে ওমডিয়া। তাদের হিসাবে, ২০২৬ সালে ডিসপ্লে বাজারের মোট আয় ৫৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে, যা ২০২৫ সালের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি। আর এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে বড় আকারের টেলিভিশন স্ক্রিন (৬৫ থেকে ৮৩ ইঞ্চি), নতুন প্রজন্মের স্মার্টফোন ডিসপ্লে এবং ল্যাপটপ ও ট্যাবলেটের স্ক্রিন।
ওমডিয়ার ডিসপ্লে বিভাগের সিনিয়র পরিচালক ডেভিড শেহ বলেন, এখন বাজারে মূল চ্যালেঞ্জ হলো দাম। স্মার্টফোনে এই প্রযুক্তির ব্যবহার এত বেশি হয়ে গেছে যে নতুন করে বিক্রি বাড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বিক্রি বাড়াতে কোম্পানিগুলো দাম কমাচ্ছে ঠিকই কিন্তু আগের মতো লাভ হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ল্যাপটপ ও ট্যাবলেটের ডিসপ্লে প্রতিনিয়ত উন্নত হচ্ছে। নতুন স্ক্রিনগুলো আগের চেয়ে হালকা ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। তবু ব্র্যান্ডগুলো খরচ কমানোর দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। এতে অ্যামোলেড স্ক্রিনের সঙ্গে পুরনো ধাঁচের স্ক্রিনের (এলসিডি) দামের পার্থক্যও কমে আসছে।
এদিকে সংস্থাটি বলছে, আগামী কয়েক বছরে চীনে নতুন ডিসপ্লে কারখানা চালু হলে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। এতে দাম কমলেও, নতুন প্রযুক্তির কারণে স্ক্রিনের মান আরও ভালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।