ঢাকা, ১২ মে, ২০২৫ (বাসস) : স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সকল পুরাতন আইন পর্যালোচনা ও যুগোপযোগী করা এবং নতুন আইন প্রণয়ন জরুরি।
‘স্বাস্থ্য সবার অধিকার’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশন গত ৫ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন আইনের সংস্কার বিষয়ে সুপারিশে উল্লেখ করে- 'সকল সংশ্লিষ্ট পুরাতন আইন পর্যালোচনা ও যুগোপযোগী করা, এবং নতুন আইন প্রণয়ন জরুরি। এতে রোগী সুরক্ষা, আর্থিক স্থায়িত্ব, জবাবদিহিতা ও জরুরি প্রস্তুতি নিশ্চিত হবে।'
সুপারিশে বলা হয়, প্রস্তাবিত নতুন আইনসমূহ হবে-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন আইন, বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস আইন, জনস্বাস্থ্য অবকাঠামো আইন, বাংলাদেশ ফুড, ড্রাগ ও মেডিকেল ডিভাইস আইন, ওষুধের মূল্য নির্ধারণ ও প্রবেশাধিকার আইন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও রোগী নিরাপত্তা আইন, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক অ্যাক্রেডিটেশন আইন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন, নারী স্বাস্থ্য আইন, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ আইন, শিশু বিকাশ কেন্দ্র আইন, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল আইন।
যে সকল আইনের সংশোধন করা প্রয়োজন বলে সুপারিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, মেডিকেল শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল আইন, ফার্মেসি কাউন্সিল আইন, অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল কাউন্সিল আইন।
'প্রস্তাবিত ও বিদ্যমান আইনসমূহ সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে একটি সমন্বিত কাঠামো গড়ে তুলতে পারে। এ আইনসমূহ শুধু স্বাস্থ্যখাতেই নয়, বরং পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক ন্যায়বিচারেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে স্বাস্থ্যখাত আরও নিরাপদ, সমতা ভিত্তিক ও টেকসই হবে এবং বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে' বলে সুপারিশে বলা হয়।
প্রস্তাবনার মুখবন্ধে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলোতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী, সহজলভ্য ও সার্বজনীন করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ‘স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন’ নামে কমিশন গঠন করে গত ১৮ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। জাতীয় অধ্যাপক ও ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ডা. এ কে আজাদ খানকে কমিশনের প্রধান করা হয়।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন ও সুপারিশ প্রণয়নে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ ও সহযোগিতা গ্রহণ করেছে।