ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা আরও সুশৃঙ্খল করতে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোকে নতুন ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আজ মঙ্গলবার দেশের সব মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক, জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহ্সান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, ডেঙ্গু চিকিৎসায় দেশের সব সরকারি হাসপাতালকে অবিলম্বে বিশেষ ওয়ার্ড তৈরি করতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা টিম গঠন করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করছে, এ ব্যবস্থার মাধ্যমে রোগীর সেবা উন্নত হবে, ঝুঁকি কমবে ও হাসপাতালে চিকিৎসার মান বৃদ্ধি পাবে।
নির্দেশনাগুলো হলো:
১. ডেঙ্গু রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে এনএস ওয়ান পরীক্ষা করতে হবে। এনএস ওয়ান/অ্যান্টিজেন কিটের জন্য সিএমএসডি অথবা সিডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
২. ভর্তি রোগীদের জন্য হাসপাতালে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩. হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অন্যান্য উপকরণের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ভর্তি হওয়া রোগীদের হাসপাতালের নির্দিষ্ট ওয়ার্ড বা কক্ষে রাখতে হবে।
৫. ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য মেডিসিন, শিশু ও প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করতে হবে। বোর্ডের তত্ত্বাবধানে মেডিকেল অফিসার, রেসিডেন্ট ও প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের একটি দল গঠন করতে হবে, যারা কেবল এই রোগীদের চিকিৎসা করবেন।
৬. বহির্বিভাগে আসা রোগীদের মধ্যে যারা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হবে, তাদের একটি নিদিষ্ট কক্ষে বিশেষজ্ঞ বোর্ড ও চিকিৎসকরা চিকিৎসা দেবেন।
৭. আইসিইউর প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে সুবিধা থাকলে ডেঙ্গু রোগীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৮. রোগীর তথ্য সংরক্ষণ ও প্রেরণের জন্য একজন নার্সকে দায়িত্ব দিতে হবে।
৯. কোনো ডেঙ্গু রোগী মারা গেলে সংক্ষিপ্ত তথ্য ৬ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে (হাসপাতাল ও সিডিসি) জানাতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
১০. হাসপাতাল এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং মশক নিধন কার্যক্রম চালানোর জন্য সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দেবেন হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক।
১১. প্রতি শনিবার সকালে হাসপাতালের পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক বা সিভিল সার্জনের সভাপতিত্বে ডেঙ্গু সমন্বয় সভা করতে হবে।
১২. অন্যান্য জেলা হাসপাতাল প্রয়োজনে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৫২৭ জনে।