
ঢাকা, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ইরাকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আগে আগাম ভোট দিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত জনগণ।
বাগদাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
ইরাকি সংবাদ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনের দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। মোট ২ কোটি ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে ১৩ লাখই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
এদিকে, আগাম ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ২৬ হাজার ৫০০ জনের বেশি বাস্তুচ্যুত নাগরিকও।
আগামী ১১ নভেম্বর ইরাকে ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত হন সুন্নি নেতা সাদ্দাম হোসেন।
৩২৯ আসনের সংসদের জন্য এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ হাজার ৭৪০ জন প্রার্থী। এদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী।
২০২৩ সালে পুনরায় কার্যকর হওয়া পুরনো নির্বাচন আইন অনুযায়ী এবার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অনেকেই মনে করছেন, এই আইন বড় দলগুলোর পক্ষে বেশি সুবিধাজনক।
২০২১ সালের নির্বাচনে প্রায় ৭০ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন মাত্র ৭৫ জন।
২০২১ সালে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪১ শতাংশ। যা দেশটির সর্বনিম্ন রেকর্ড।
তবে পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন যে এবার ভোটারের উপস্থিতির হার আগেরবারের থেকেও কমতে পারে। কারণ এর পেছনে রয়েছে নেতৃত্বে স্থবিরতা, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতায় জনগণের অনীহা ও হতাশা।
প্রভাবশালী শিয়া ধর্মীয় নেতা মোকতাদা সদর এই নির্বাচনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করে তার অনুসারীদের ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের পর ইরাকের রাজনীতিতে প্রাধান্য পেয়েছে এক সময় নিপীড়িত শিয়া সম্প্রদায়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি ও ধর্মীয় নেতা আম্মার আল-হাকিমসহ প্রভাবশালী শিয়া নেতারা এবং ইরানপন্থী কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এবার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
২০২২ সালে নির্বাচিত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছেন।
তিনি ইরানপন্থী দলগুলোর সমর্থনে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং এবারও তার বড় একটি জোট গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইরাকে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী হন একজন শিয়া মুসলিম, স্পিকার হন একজন সুন্নি ও রাষ্ট্রপতির পদটি থাকে কুর্দদের জন্য, যা মূলত আনুষ্ঠানিক।
নির্বাচনের পর সবচেয়ে বড় সংসদীয় জোটটি নির্ধারণ করবে— তাদের মধ্য থেকে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন।