
ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : টানা ভারি বর্ষণে নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার পশ্চিম-উত্তর আমেরিকায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্য এবং কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া কয়েক দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টির দাপটে বিপর্যস্ত। নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে।
সিয়াটল ও টাকোমার দক্ষিণে বসবাসকারীদের ঘরবাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিমান থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, অনেক কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর পানি বসতবাড়ির প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে।
ওর্টিং নগরীতে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, লেভেল ৩ অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে চলে যাওয়ার নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে। বন্যার কারণে এলাকাটিতে জীবন ও সম্পদের ওপর বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, জীবনের প্রতি তাৎক্ষণিক হুমকি থাকায় এখনই এলাকা ছাড়ার আইনগত নির্দেশ দেওয়া হলো। পাশাপাশি এলাকাটিতে জনসাধারণের প্রবেশ আইনগতভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল।
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের উত্তরের সিয়াটল ও স্নোহোমিশ নগরীর বেশ কিছু বাড়িঘর ইতোমধ্যে ডুবে গেছে। সীমান্ত নগরী সুমাসের নিম্নাঞ্চলের কিছু অংশ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সীমান্তের ঠিক ওপারে কানাডার অ্যাবট্সফোর্ড শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝুঁকির মুখে পড়েছে কয়েকশ’ বাড়িঘর।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার পরিবহন প্ল্যাটফর্ম ড্রাইভ বিসি জানিয়েছে, ভ্যাঙ্কুভারের সঙ্গে যাতায়াতের কয়েকটি প্রধান মহাসড়ক বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানায়, প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ধেয়ে আসা একটি ‘অ্যাটমোসফেরিক রিভার’-এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পশ্চিম উপকূলের কিছু এলাকায় ২৫ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। তবে বিপুল পানি নামতে আরও সময় লাগবে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে এই অংশে আবহাওয়া তুলনামূলক শুষ্ক থাকতে পারে। তবে পশ্চিম ওয়াশিংটন ও উত্তরপশ্চিম ওরেগনের কিছু এলাকায় ভয়াবহ ও বিধ্বংসী বন্যার প্রভাব অব্যাহত থাকতে পারে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওয়াশিংটন ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের তলব করা হয়েছে। তারা বালুর বস্তার দেওয়ালসহ জরুরি কাজ করছে। আরও দুই শ’ সেনা পথে রয়েছে বলে জানিয়েছে সামরিক বাহিনী।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শিল্পায়নের যুগ থেকে অবাধে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন বেড়েই চলছে। এর ফলে আবহাওয়া ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে।
উষ্ণতর বায়ুমণ্ডল মৌসুমি আবহাওয়ায় বড় উত্থান-পতন সৃষ্টি করছে। কোথাও শক্তিশালী ঝড় ও বন্যা দেখা দিচ্ছে, আবার কোথাও দীর্ঘ খরা পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।