মোশারফ হোসেন
রাজবাড়ী, ৩১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণঅভ্যূত্থান চলাকালে ৩১ জুলাই রাজবাড়ীর ইতিহাসে ছিল ভয়াবহ দিন। জুলাইজুড়ে দেশব্যাপী চলা আন্দোলনের সময়ের এ দিন রাজবাড়ীতে গণগ্রেপ্তার চালানো হয় শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে।
এদিনে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু, ছাত্রদলের জেলার আহবায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান, শিবির নেতা রঞ্জু আহমেদ, ছাত্রদলের নেত্রী সোনিয়া আক্তার স্মৃতিসহ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৭ জুলাই থেকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক মাঠ দখলে রাখতে রাজবাড়ী ১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে জেলাজুড়ে বিরোধীদের অপর নির্যাতন চালতে থাকে।
ওই সময় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আইনজীবী লিয়াকত আলী বাবু জানান, সেদিন কর্মীদের নিয়ে জেলা বিএনপি অফিসে প্রোগ্রাম করছিলাম। হঠাৎ পুলিশ অফিসে ঢুকে আমাদের বেধড়ক মারধর শুরু করে। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় ওদের উপেক্ষা করে আমরা মিছিল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। একপর্যায়ে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, ২৮ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের কর্মীরা নানা ধরনের নির্যাতন উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল, মিটিং অব্যাহত রাখে। ২৮ জুলাইয়ের পর থেকে আমাদের কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি নির্যাতন ও গ্রেপ্তার করা হয়। পিটিয়ে আহত করা হয়।
আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও আটকের ভয়ে চিকিৎসা না নিয়ে অনেকে হাসপাতাল ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
ছাত্রদল নেতা আরিফুল ইসলাম রোমান বলেন, গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ নানা মিথ্যা মামলায় আমিসহ ১০জনকে ২৩ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। ৩/৪ দিন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২৮ জুলাইয়ের পর থেকে পুলিশ রাজবাড়ীতে বেধড়ক লাঠিচার্জ ও মারপিট শুরু করে।
এ সময়গুলোতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ আরও ব্যাপক হতে থাকে।
ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিলে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘সামনে আসছে ফাগুন, আমরা হব দ্বিগুণ’। ছাত্র জনতার মিছিল আন্দোলনের পক্ষে সহায়ক হয়।
ছাত্রশিবির নেতা রন্জু আহমেদ বলেন, আমাকে দুইদিন ধরে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে রোদে ফেলে রাখে। অজ্ঞান অবস্থায় চলে গেলে, হাসপতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল থেকে একটু সুস্থ হয়ে ফিরলে আবার শুরু হয় নির্যাতন।