ট্রাইব্যুনালে হাসিনার মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অক্টোবরে শেষের আশা প্রসিকিউশনের

বাসস
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৭:০২ আপডেট: : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৭:০৭
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৭ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আগামী অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হওয়ার আশা প্রসিকিউশনের।

আজকে পর্যন্ত এই মামলায় ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে বলে আজ রোববার সাংবাদিকদের কাছে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম।

বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা আজ শেষ হয়। এর আগে তিন দিনে এই মামলায় পাঁচ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।

আজ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানি করেন। একসময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়া আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এছাড়া এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।

গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-১ পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং পরদিন দুটি পত্রিকায় শেখ হাসিনা ও কামালকে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক দুই আসামি ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে এই মামলায়  অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী শুনানি শেষে গত ১০ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ট্র্যাইব্যুনাল-১।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় অভিযুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ এনে অভিযোগ গঠনের আবেদন করে প্রসিকিউশন।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সাবেক হুইপ মাহমুদ পরিবারের সম্পদ জব্দ
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু 
আমদানি অনুমতির খবরে চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম 
সাবেক এমপি আশরাফের স্ত্রী আফরোজার জমি-দোকান ক্রোকের আদেশ
শেরপুরে নিখোঁজের একদিন পর ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
দ্বিতীয় হার বাংলাদেশ ‘এ’ দলের
চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর হামলা করা সেই যুবলীগ নেতা অস্ত্রসহ গ্রেফতার
প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশের সার্ফাররা
খুলনায় জেলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার দিনের ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দল ঘোষণা
১০