শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : রাজধানীতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার জাল নোটসহ ৪ জনকে আটক করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মূল্যমানের জাল নোট (যার মধ্যে ১০০০, ৫০০ ও ১০০ টাকা সমমানের জাল নোট রয়েছে), ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ১১টি টোনার ও কার্টিজ, ১টি পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এই সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম মূলহোতা মোহাম্মদ আমিনুল হক ওরফে দুলাল (৪৩), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে দিদার (৩০), মো. সুজন আলী (৪০) ও মোহাম্মদ সাকিবুল হাসান (২১)।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারস্থ র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক (মূখপাত্র) কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব সদরদপ্তর ও র্যাব-১০ এর বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খন্দকার আল মঈন জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০ এর সমন্বয়ে গঠিত একটি দল রাজধানীর ডেমরা, সবুজবাগ ও খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা পরষ্পর যোগসাজশে এক বছর যাবৎ জাল নোট তৈরি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিলো।
এ সংঘবদ্ধ চক্রের মূল হোতা আমিনুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত অপর সদস্যদের সাথে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে আমিনুলের নেতৃত্বে কম সময়ে অল্প পুঁজিতে অধিক লাভের আশায় তারা জাল নোটের ব্যবসার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথমে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে এবং সেখানে তারা জাল নোট তৈরি ও বিক্রয়ের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান করে। এই মেসেঞ্জার গ্রুপের এ্যাডমিন হিসেবে কাজ করত আমিনুলের সহযোগী দিদার।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, যখন জাল নোটের ব্যবসা রমরমা থাকে তখন চক্রটি দৈনিক ২ থেকে ৩ লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করত। মূলত তারা একটি অভিনব কায়দায় জাল নোটগুলো বিক্রয় করত। তারা তাদের ফেইসবুক গ্রুপ থেকে কমেন্ট দেখে তাদের সাথে মেসেঞ্জারে চ্যাটিং এর মাধ্যমে ক্লায়েন্ট তৈরি করে অগ্রীম টাকা নিয়ে নিত এবং পরবর্তীতে তাদের সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতো।
র্যাব জানিয়েছে, এ চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরিকৃত জাল নোট সরবরাহ করত। তারা প্রতি ১ লাখ টাকা মূল্যের জাল নোট ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। চক্রটি মাছ বাজার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশলে জাল নোট সরবরাহ করে আসছিল। এছাড়াও তারা অধিক জন-সমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানীর পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমান জাল নোট ছাপিয়ে থাকে বলে স্বীকার করে।
আমিনুল রাজধানীর একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতো। এ পেশার আড়ালে সে অনলাইনে জাল নোট তৈরির সার্বিক বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে। আমিনুল প্রায় এক বছর যাবৎ চক্রটি পরিচালনা করে আসছিল।