বাসস
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৬

রাজধানীতে প্রতারণার অভিযোগে ৪ জন গ্রেফতার

ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : কথিত সীমানা পিলার ও প্রাচীন কয়েন ক্রয়-বিক্রয়ে প্রলুব্ধ করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-রমনা বিভাগের একটি টিম।
আজ সোমবার দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মো. মিজানুর রহমান মজনু, মো. আক্তারুজ্জামান ওরফে তাহেরুল ইসলাম, মো. জসিম ও ইব্রাহিম বেপারি।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি কথিত ব্রিটিশ সীমানা পিলার, ৪টি কথিত প্রাচীন কয়েন, নগদ ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ৪টি মোবাইল ফোন, ১টি চুক্তিপত্র, ৩২টি চেক, ভুয়া ভিজিটিং কার্ড ও একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
রোববার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজিয়া ইসলামের নেতৃত্বে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, রমনা মডেল থানায় একজন ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। মামলাটি তদন্তকালে দেখা যায় প্রতারক চক্রটির মূল টার্গেট হচ্ছে নতুন শিল্পপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদেরকে কথিত প্রাচীন প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন সীমানা পিলার ও প্রাচীন কয়েন ক্রয়-বিক্রয়ের লোভে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিতো চক্রটি।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত তাহেরুল ইসলামের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে আমেরিকার হেরিটেজ অকশন নামে একটি কোম্পানির বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে পরিচয় দেন। তাহেরুলের শারীরিক গঠন, পোশাক, দামি গাড়ি ও স্মার্টনেস দেখে ভিকটিম তাকে বিশ্বাস করে এবং তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই পরিচয়ের সুবাদে তাহেরুল ভিকটিমকে বলে তার গ্রামের একজন সহজ সরল কৃষক মিজানুর বাড়ির পাশে কৃষি জমি খনন করার সময় একটি সীমানা পিলার পেয়েছেন। তাহেরুল ভিকটিমকে বলেন, তিনি যেহেতু আমেরিকার একটি কোম্পানির কান্ট্রি ডিরেক্টর, তিনি এই পিলারটি ২শ’ কোটি টাকার বিনিময়ে আমেরিকান কোম্পানির মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন। তিনি ভিকটিমকে শেয়ারে থাকার জন্য অফার দেন। তার প্রস্তাবে ভিকটিম তাহেরুলের সাথে কৃষকের বাড়ি যায় পিলারটি দেখতে। এইদিকে তাহেরুল তার সহকারী জসিমকে কেমিস্ট সাজিয়ে নিয়ে যান এবং তাকে দিয়ে পিলারটির রাসায়নিক পরীক্ষা করায়। জসিম সবকিছু দেখে পিলারটি খাঁটি বলে জানান। এরফলে তাহেরুলের কথা ভিকটিমের আরও বিশ্বাস হয়।
তিনি বলেন, ভিকটিম তখন কৃষক মিজানুর রহমানের সাথে সীমানা পিলারটি ৩৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ক্রয় করার চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক নগদ ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। কিন্তু প্রতারকদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ কথিত সীমানা পিলারটি ভিকটিমের কাছে হস্থান্তর করার কিছুক্ষণ পরেই তাদের লোকজন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে এটি জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, এ চক্রে ২০ থেকে ২৫ জন লোক কাজ করে। প্রতারণায় তাদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা রয়েছে। 
লোভে পড়ে এ ধরণের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। কেউ এ ধরণের প্রতারণার শিকার হলে সাথে সাথে নিকটস্থ থানাকে অবহিত করা অনুরোধ করেন তিনি।